এর আগে গত ১ এপ্রিল বুকে ব্যথা অনুভব হলে তাকে মহাখালী মেট্রোপলিটন হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে করোনা পরীক্ষা করানো হলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এছাড়া তার ফুসফুসে ইনফেকশন ধরা পড়ে। এরপর তাকে রাজধানীর মালিবাগের প্রশান্তি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। অবস্থার অবনতি হলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
ইন্দ্রমোহন রাজবংশী লোকগানের শিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, জারি, সারি, মুর্শিদি ইত্যাদি গান করতেন। তিনি সংগীত কলেজে দীর্ঘদিন লোকসংগীত বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ লোকসংগীত পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৬৭ সালে ‘চেনা অচেনা’ চলচ্চিত্রে গান গাওয়ার মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে প্লেব্যাকে যুক্ত হন। চলচ্চিত্র, বেতার, টেলিভিশনের তিনি নিয়মিত শিল্পী ছিলেন।
দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে ইন্দ্রমোহন রাজবংশী যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু পাকিস্তানিদের হাতে ধরা পড়ায় সম্মুখ যুদ্ধে যেতে পারেননি। পাকিস্তানিরা সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর অকথ্য নির্যাতন করায় ইন্দ্রমোহন রাজবংশী নাম, পরিচয় গোপন করে পাকিস্তানিদের দোভাষী হিসেবে কাজ করেন কিছুদিন। পরবর্তীতে সেখান থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যুক্ত হন।
এই সংগীত কিংবদন্তি গান গাওয়ার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকগান সংগ্রহ করতেন। সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৮ সালে একুশে পদক লাভ করেন। তার স্ত্রী দীপ্তি রাজবংশী, পুত্র রবীন রাজবংশী ও মেয়ে প্রবাসী রাজবংশীও লোকগানের সঙ্গে জড়িত।