মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) এই বিজনেস কাউন্সিলের উদ্বোধন করা। মার্কিন উদ্যোক্তাদের কাছে এদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনা তুলে ধরবে এই কাউন্সিল।
কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জ্বালানি ও পরিবেশ দূত মার্সিয়া ব্লুম বার্নিকাট, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ডঃ আহমদ কাইকাউস, মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইসলাম।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গণতন্ত্র ও উন্নয়নের দিকে আমাদের অগ্রযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্র একটি শক্তিশালী অংশীদার হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যকে আরও সম্প্রসারণের জন্য এ ধরনের নৈতিক সহায়তা প্রদান অত্যন্ত জরুরি। এদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগের সুবিধার্থে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি সব ক্ষেত্রেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দেশীয় বাজারের দ্রুত সম্প্রসারণ এবং চার বিলিয়ন মানুষের বিশাল আঞ্চলিক বাজারের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান যোগযোগের কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে একটি আদর্শ দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। আশা করি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বকে আরও প্রসারিত করতে সহায়তা করবে।
মার্কিন চেম্বার অব কমার্সের নির্বাহী সহ-সভাপতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান মেরন ব্রিলিয়ান্ট বলেন, মার্কিন চেম্বার অফ কমার্সের সঙ্গে বাংলাদেশের সুদীর্ঘ বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্যতম বাণিজ্য অংশীদার এবং গত এক দশকে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখে আমরা নিশ্চিত যে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগের নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হবে। আমরা বিশ্বাস করি, এই কাউন্সিল উভয় দেশের ব্যবসায়ী ও সরকারী নেতাদের মধ্যে একটি প্রধান সেতু হিসাবে কাজ করবে।
এই কাউন্সিলের নেতৃত্ব দেবেন যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি নিশা বিশওয়াল এবং দক্ষিণ এশিয়ার ইউএস চেম্বার অফ কমার্সের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের পরিচালক সিদ্ধান্ত মেহরা।
গত ১০ বছরে দুদেশের বাণিজ্য ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ২০২০ সালে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রায় ৭ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে এসে দাঁড়ায়। এতে বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ২ দশমিক ১৩ বিলিয়ন এবং ৫ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ প্রধানত তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল খাতের পণ্য সবচেয়ে বেশি রপ্তানি করে থাকে, তবে সাম্প্রতিক সময়ে পাদুকা, চামড়া, মাছ, ফার্নিচার, ওষুধ, প্লাস্টিক, খেলনা, সিরামিক ও কৃষিজাত পণ্য প্রভৃতি রপ্তানি করছে পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ সুতা, রড, স্টিল, বয়লার এবং ওয়েল সিড প্রভৃতি পণ্য আমদানি করে থাকে।
বর্তমানে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৩ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং মোট বিনিয়োগের প্রায় ৭৭ দশমিক ২৮ শতাংশ হলো গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম খাতে। তৈরি পোশাক, মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি, অটোমোবাইল, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং তথ্য-প্রযুক্তি প্রভৃতি খাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীরা।