জানা যায়, মঙ্গলবার দেশটি রাশিয়ার তৈরি করোনার টিকা স্পুৎনিক ভি ব্যবহারে জরুরি অনুমোদন দিয়েছে। এছাড়াও ফাইজার, জনসন অ্যান্ড জনসন এবং মডার্নার টিকার জরুরি অনুমোদন দেওয়ার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার ব্যবস্থাও নিতে বলা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, অনুমোদন দেওয়ার কাজ দ্রুত করতে টিকার অনুমোদনের আগে সেটির নিরাপত্তা যাচাই করতে ছোট আকারে যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, এক্ষেত্রে সেটা বাদ দেওয়া হয়ছে। যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে, পশ্চিমা অনেক দেশ এবং জাপান এরইমধ্যে ওই টিকাগুলোকে জরুরি অনুমোদন দিয়েছে।
ভারতে বর্তমানে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা (যেটি ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটে তৈরি হচ্ছে) এবং ভারত বায়োটেকের তৈরি টিকা কোভ্যাক্সিন ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ টিকা উৎপাদনকারী দেশ ভারত। এ মাসে সেখানে করোনাভাইরাস সংক্রমণের উল্লম্ফনের আগেও ভারত সরকার নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে লাখ লাখ ডোজ কোভিড টিকা রপ্তানি করছিল। কিন্তু এখন বিভিন্ন রাজ্য থেকে টিকা সরবরাহে অপর্যাপ্ততার কথা জানানো হচ্ছে।
ভারতে গত কয়েক দিনে দৈনিক প্রায় দেড় লাখের মত নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। সঙ্গে বেড়ে গেছে মৃত্যু। যে কারণে টিকার চাহিদাও বেড়ে গেছে।
যে চাপ সামলাতে ভারতে এখন টিকা আমদানির কথা ভাবতে হচ্ছে। এতে বিশ্বের অনেক দেশের টিকাদান কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটবে। কারণ, তারা টিকা সরবরাহের জন্য ভারতের উপর নির্ভরশীল।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে মঙ্গলবার বলা হয়, যেসব টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা জাপানের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেয়েছে সেগুলো ‘হয়তো ভারতেও নিশ্চিতভাবে জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেওয়া যায়’।
‘‘যদি এদের কেউ একজন কোনো একটি টিকার অনুমোদন দেয়, তাহলে সেটি এখন ব্যবহারের জন্য ভারতে নিয়ে আসতেও প্রস্তুত। আমরা আশা করছি এবং আমরা ফাইজার, মডার্না, জনসন অ্যান্ড জনসন এবং অন্যান্য টিকা প্রস্তুতকারকদের যত দ্রুত সম্ভব ভারতে আসার প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি।”
গত ফেব্রুয়ারিতে ফাইজার ভারতে তাদের টিকার জরুরি অনুমোদনের আবেদন করেছিল, যেটি প্রত্যাহার করা হয়। ফাইজার থেকে বলা হয়, এখন তারা আবার ভারতে তাদের টিকার জরুরি অনুমোদন পেতে কাজ করবে। গত ২ এপ্রিল থেকে ভারতে প্রতিদিন সবচেয়ে বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছে। মঙ্গলবারও সেখানে এক লাখ ৬১ হাজার ৭৩৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। মারা গেছেন ৮৭৯ জন। মোট শনাক্তের বিচারে ব্রাজিলকে পেছনে ফেলে ভারত আবার তালিকার দুই নম্বরে উঠে গেছে।