করোনা আক্রান্তদের প্রায় উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গযুক্ত একটি বড় অংশই। এ ধরনের রোগীদের রোজা রাখতে নেই কোনও বাধা। তবে মাঝারি বা তীব্র মাত্রার সংক্রমণে ভুগছেন, অক্সিজেন বা ইনজেকশন চলছে কিংবা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন অথবা যাদের গুরুতর অন্য রোগ রয়েছে, বয়স্ক এমন করোনা রোগীদের রোজা না রাখাই উচিত। এ ব্যাপারে সঠিক পরামর্শ পেতে আলাপ করা উচিত চিকিৎসকের সঙ্গে।
মৃদু উপসর্গ নিয়ে রোজা পালন করতে চাইলে সতর্ক থাকতে হবে যেসব বিষয়ে:
সাহরি-ইফতার: করোনা সংক্রমিত রোগীদের ইফতার বা সাহরিতে অবশ্যই মানতে হবে আইসোলেশনের সব নিয়ম। প্রয়োজন ও সময় অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে রেখে রোগীর ঘরের সামনে রেখে আসতে হবে খাবার, পানি, পানীয় সামগ্রী। খেয়াল রাখতে হবে যেন রোগী সবার সঙ্গে এক টেবিলে বসে ইফতার সাহরি না খান। আর রোগীর থালা বাসন যেন নিজেই ধুয়ে নেন।
রমজানের ইবাদত বন্দেগি: জ্বর, কাশি, স্বাদ গন্ধহীনতা বা করোনার মৃদু উপসর্গ রয়েছে এমন রোগী পজিটিভি বা নেগেটিভ উভয়েই মসজিদে নামাজ বা তারাবি থেকে বিরত থাকুন। বাড়িতে বসেই ইবাদত করুন।
স্বাভাবিক খাবার ও পানি পান: শরীরে দ্রুত পানি স্বল্পতা দেখা দেয় করোনা বা অন্য যে কোনও সংক্রমণে। বিশেষ করে শরীরে জ্বর থাকলে দ্রুত পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তাই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে রোগীকে। আর রোজায় এ বিষয়ে আরও বিশেষভাবে নজর দেয়া আবশ্যক। ইফতার থেকে নিয়ে সাহরি পর্যন্ত ডাবের পানি, ফলের রস, স্যুপ, তাজা ফলমূল ইত্যাদি খেতে হবে।
বিশ্রাম: রোজা চলাকালীন করোনা সংক্রমিত রোগীকে আইসোলেশনে থেকে পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিতে হবে। মাঝেমধ্যে হাঁটাহাঁটি ও পায়ের ব্যায়ামও হালকাভাবে করা যেতে পারে। তারাবির নামাজ পুরো পড়তে ক্লান্ত লাগলে সংক্ষিপ্ত করে পড়া যেতে পারে।
নিয়মিত প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা: দিনে অথবা রাতে নিয়মিত পালস অক্সিমিটার দিয়ে পরীক্ষা করা যেতে পারে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা, দেখুন হৃদস্পন্দনও। সম্ভব হলে মাপুন রক্তচাপ। প্রস্রাবের পরিমাণ ও রং লক্ষ্য করা যেতে পারে। তাছাড়া যারা ডায়াবেটিসের রোগী তারা বারবার রক্তের শর্করা পরিমাপ করুন। আর স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন টেলিফোনে কিংবা ইন্টারনেটে।
যে সময় রোজা ভাঙতে পারেন: করোনা সংক্রমণ নিয়ে রোজা পালনকারীর যদি হঠাৎ শ্বাসকষ্ট, মাথা শূন্য মনে হওয়া, রক্তচাপ কমে যাওয়া, হৃৎস্পন্দন কম বা বেশি মনে হওয়া, অতিরিক্ত ক্লান্তি বা অবসাদ, সামান্য পরিশ্রমে অস্থির বা ভীষণ অবসাদগ্রস্ত মনে হওয়া। এমন লক্ষণ দেখা দিলে রোজা ভাঙা যেতে পারে। আর অক্সিজেন স্যাচুরেশন নেমে যেতে থাকলে অবশ্যই রোজা ভেঙে ফেলুন। বিষয়টি দ্রুত জানান পরিবারের সদস্যদের।-সময়