শনিবার (২৪ এপ্রিল) ‘শিল্প ও শিক্ষাখাতের সমন্বয়: শিক্ষাখাতের ভূমিকা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এ আহ্বান জানানো হয়। ডিসিসিআই এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে।
ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, আমাদের প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থায় পাঠদান শেষে শিল্পখাতের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা না থাকার কারণে তরুণ সমাজ কর্মসংস্থানে প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছে। এ কারণে আমাদের শিল্পখাতের বিশেষকরে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনার জন্য বিদেশি নাগরিকদের ওপর প্রতিনিয়ত নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে প্রচুর পরিমাণে দেশীয় মুদ্রা বাইরের দেশে চলে যাচ্ছে, যা বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির ধারাকে শ্লথ করে দিচ্ছে।
ডিসিসিআই সভাপতি জানান, আমাদের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় ৪৪ মিলিয়ন, যা এদেশের অর্থনীতি সম্প্রসারণে অত্যন্ত সহায়ক শক্তি। তবে এ শক্তিকে কাজে লাগানোর জন্য শিল্পখাতের চাহিদা মোতাবেক যুগোপযোগী শিক্ষা কার্যক্রম চালুর বিষয়ে আমারা বেশ পিছিয়ে রয়েছি এবং এর ফলে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বিনিয়োগ আকর্ষণ ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ক্রমান্বয়ে পিছিয়ে পড়ছে।
তিনি শিক্ষাখাতের গবেষণা কার্যক্রমের জন্য শিল্পখাতের আর্থিক সহায়তাকে কর অব্যাহতি প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যার মাধ্যমে শিল্পখাতকে এ ধরনের কার্যক্রমে এগিয়ে আসাতে উৎসাহিত করা সম্ভব হবে।
ওয়েবিনারের নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস্-এর (বিইউপি) উপ-উপাচার্য এম আবুল কাসেম মজুমদার, পিএইচডি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশের (এআইইউবি) উপাচার্য ড. কারম্যান জেড লামাগনা এবং ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) বিশেষ উপদেষ্টা ও ডিন প্রফেসর ইমরান রহমান প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন।
এআইইউবি-এর উপাচার্য ড. কারম্যান জেড লামাগনা বলেন, প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ হচ্ছে না। এজন্য তিনি শিক্ষা কারিকুলাম যুগোপযোগী করণের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে ভালো পরিবেশ নিশ্চিতকরণের আহ্বান জানান। শিল্প ও শিক্ষাখাতের বিদ্যমান দূরত্ব কমানোর লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ ও অভিজ্ঞতা বিনিময় বাড়ানোর বিষয়ে মত দেন তিনি।
তিনি বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা কার্যক্রমে আর্থিক সহায়তা প্রদানে সরকারি ও বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। পাশাপাশি তিনি শিক্ষাখাতে নীতি সহায়তা ও অবকাঠামো উন্নয়ন এবং আর্থিক সহায়তা দিতে সরকারকে অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পখাতের সমন্বয়ের জন্য সরকারকে প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকা পালনেরও প্রস্তাব করেন তিনি।
বিইউপির উপ-উপাচার্য এম আবুল কাসেম মজুমদার বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে শিল্প ও শিক্ষাখাতের সমন্বয়ের কোনো বিকল্প নেই এবং এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কার্যক্রম সম্প্রসারণের কোনো বিকল্প নেই। তিনি বিশেষকরে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য নির্বাচনে শিল্পখাতের প্রতিনিধিদেরকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেন।