শনিবার (২২ মে) ব্র্যাক বিজনেস স্কুল ও এইচএসবিসি আয়োজিত বিজনেস কেস কমপিটিশন ২০২১-এর চূড়ান্ত পর্বে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।এবারের বিষয় ছিল জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ন্ত্রণ।
উন্নয়নের মহাসড়কে তরুণদের চালিকা শক্তি হিসেবে আখ্যা দিয়ে তিনি আরও বলেন, বর্তমান চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সময়ে তরুণদের প্রস্তুত হতে হবে। এইচএসবিসির প্রতি তাঁর আহ্বান, স্টার্টআপের জন্য পৃথক তহবিল গঠন করুক তারা।
ট্রান্সকম গ্রুপের গ্রুপ সিইও সিমিন রহমান বলেন, তরুণেরা জলবায়ু সমস্যার সমাধানে এগিয়ে এসেছেন, প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন, এটা অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ। ট্রান্সকম গ্রুপও কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে নানা ধরনের চেষ্টা করছে। সে লক্ষ্যে বেভারেজে পুনর্ব্যবহার উপযোগী উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে। তাঁর আহ্বান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সবাই এগিয়ে আসুন।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে দেশগুলো পৃথিবীতে সবচেয়ে আক্রান্ত হচ্ছে, বাংলাদেশ তাদের মধ্যে অন্যতম। প্রতিবছরই নানা দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশের উপকূল। জলবায়ু উদ্বাস্তু নামে নতুন ধরনের উদ্বাস্তু তৈরি হয়েছে। এ বাস্তবতায় এইচএসবিসি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সহায়তায় নানা উদ্যোগ নিয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
স্টার্টআপ তহবিল গঠনে প্রতিমন্ত্রীর আহ্বানে এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী মাহবুব-উর রহমান বলেন, সরকারের তরফ থেকে ইতিমধ্যে সিএসআর ও স্টার্টআপ তহবিল গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সিএসআরে মুনাফার ১ শতাংশ জমা রাখা হচ্ছে। স্টার্টআপের ব্যাপারে শিগগিরই অগ্রগতি হবে।
পোশাক খাত নিয়ে মাহবুব-উর রহমান বলেন, বর্তমানে দেশের পোশাক রপ্তানিকারীরা সরাসরি ক্রেতার কাছে বিক্রি না করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করছে। কিন্তু উদ্যোগ নিলে সরাসরি ক্রেতাদের কাছেও বিক্রি করা সম্ভব। এইচএসবিসি সে লক্ষ্যে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, এখন যাঁরা পোশাক কাতে কাজ করতে আসছেন, তাঁরা এ বিষয়ক একাডেমিক শিক্ষা না নিয়েই কাজ করছেন। ফলে কিছুদিন কাজ করার পর আর ওপরে উঠতে পারছেন না। তৈরি পোশাক কারখানার মধ্যম সারিতে যে বিদেশিরা কাজ করছেন, তা মূলত এসব কারণেই। তাঁর পরামর্শ, এই খাতকে আরও প্রাতিষ্ঠানিক বাতাবরণে নিয়ে আসতে কর্মীদের পোশাক খাতবিষয়ক প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত করার বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানের আরেক বিচারক ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ ব্যবসার সামাজিক দায়বদ্ধতার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ব্যবসা একসময় খারাপ দৃষ্টিতে দেখা হতো, কিন্তু সেই দিন বদলাচ্ছে। তবে ব্যবসার উদ্দেশ্য নিছক মুনাফা করাও নয়। এসডিজি বাস্তবায়নে সরকার, বেসরকারি খাত ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত অংশগ্রহণ প্রয়োজন বলে তাঁর মত।
প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন জুনাইদ আহমেদ। চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় পাঁচটি দল অংশ নেয়। প্রথম হয়েছে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের দল হাট্টি-মাটিম-টিম। দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি দল।
প্রতিযোগিতার বিজয়ী তিনটি দল যথাক্রমে ২ লাখ, ১ লাখ ও ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার পাবে। বাংলাদেশের বিজয়ী দল হংকংয়ে অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় ২৪টি দেশের দলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার সুযোগ পাবে। প্রতিযোগিতার আরেক বিচারক ছিলেন ব্রিটিশ হাইকমিশন ঢাকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিভাগের প্রধান ডেরেক গ্রিফিথস।