এ উপলক্ষে রোববার (৩০ মে) রাজধানীর বসুন্ধরায় ওয়ালটন করপোরেট অফিসে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনলাইনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ‘ওয়ালটন ল্যাপটপ কোটি টাকার শিক্ষাবৃত্তি’ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও অনলাইন ও টেলিভিশনের মাধ্যমে পাঠদান চালু রয়েছে। তবে পর্যাপ্ত ডিজিটাল ডিভাইস না থাকায় শতভাগ শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এক্ষেত্রে ওয়ালটনের কোটি টাকার শিক্ষাবৃত্তি এবং বিনা সুদে কিস্তি সুবিধা ডিজিটাল ডিভাইস সহজলভ্য করবে। ওয়ালটনের এ উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এটি শিক্ষার্থী ও শিক্ষাব্যবস্থার জন্য সুসংবাদ।
তিনি আরও বলেন, ওয়ালটন দেশীয় প্রতিষ্ঠান, সুপারব্র্যান্ড। ডিজিটাল ডিভাইস খাতে ওয়ালটন পথ দেখাচ্ছে; এ খাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় ওয়ালটন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। আমি তাদের সাফল্য কামনা করি।
প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশে ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন করছে ওয়ালটন। তারা দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ডিজিটাল ডিভাইস রফতানি করছে। যার ফলে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং হচ্ছে। আশা করি ওয়ালটনের মাধ্যমে গার্মেন্টস খাতের মতো প্রযুক্তিপণ্য খাত বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি আয়ের উৎস হবে।
ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম রেজাউল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরো ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নজরুল ইসলাম সরকার, ইভা রেজওয়ানা নিলু, এমদাদুল হক সরকার ও হুমায়ূন কবীর, ওয়ালটন প্লাজা ট্রেডের সিইও মোহাম্মদ রায়হান, প্রধান বিপণন কর্মকর্তা ফিরোজ আলম প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নির্বাহী পরিচালক আজিজুল হাকিম।
ওয়ালটনের এ প্রকল্পের সফলতা কামনা করে শুভেচ্ছাবার্তা দেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ, লেখক ও সাংবাদিক আনিসুল হক, অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী, অভিনেত্রী তারিন জাহান, রবি টেন মিনিটস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিক প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে রেজাউল আলম বলেন, করোনাকালে শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু করার ক্ষুদ্র প্রয়াস থেকে এ উদ্যোগ। আশা করছি এ প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন। দীর্ঘ সময়ের জন্য এ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করছি।
প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ বলেন, ডিজিটাল ডিভাইস না থাকায় একজন শিক্ষার্থীও যেন বঞ্চিত না হয়, সে উদ্যেশ্যে এ প্রকল্প চালু করা হয়েছে। আমাদের চাওয়া সবাই যেন শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে পারে। জাতি যখন শিক্ষিত হবে, শিক্ষার মান ও হার যখন বাড়বে, বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের অবস্থান তখন শীর্ষে থাকবে। ইতোমধ্যেই গ্লোবাল মার্কেটে ওয়ালটনের গৌরবময় যাত্রা শুরু হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য খুব শিগগিরই ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্যে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে ওয়ালটন।
অনুষ্ঠানে ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং ডিজিটাল প্রোডাক্টসের সিইও প্রকৌশলী লিয়াকত আলী জানান, করোনা দুর্যোগের মাঝে শিক্ষার্থীদের অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম নির্বিঘ্নে করার লক্ষ্যে ‘কোটি টাকা শিক্ষাবৃত্তি প্রকল্প’ চালু হলো। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল ডিভাইস কেনায় জিরো ইন্টারেস্টে ১২ মাসের কিস্তি সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে সহজেই তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে পারবেন।
তিনি জানান, শিক্ষার্থীরা দেশের যে কোনো ওয়ালটন শো-রুম থেকে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, ট্যাবলেট পিসি, ডেস্কটপ কিংবা অল-ইন-ওয়ান কম্পিউটার কেনার পর নিজের বা অভিভাবকের মোবাইল নম্বর দিয়ে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করবেন। এরপর সফ্টওয়্যার নিয়ন্ত্রিত স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে শিক্ষাবৃত্তির টাকার পরিমাণ জানিয়ে তাদের মোবাইলে একটি এসএমএস যাবে। তারা শিক্ষাবৃত্তির টাকা নগদ গ্রহণ করতে পারবেন অথবা ক্রয়কৃত পণ্যের মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করতে পারবেন।