ভারতীয় সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, ভারতীয়দের মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগের জন্য বিশেষ কয়েকটি শর্তে শুক্রবার রাতে সেরাম ইনস্টিটিউটকে রুশ টিকা স্পুটনিক-৫ তৈরির অনুমতি দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া। রাশিয়ার ‘গামালিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি’-র সঙ্গে যৌথভাবে এই টিকা তৈরি করবে সেরাম।
এদিকে বর্তমানে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড তৈরি করছে সেরাম ইনস্টিটিউট। পাশাপাশি, রাশিয়ার স্পুটনিক-৫ তৈরির জন্য বৃহস্পতিবার ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে আবেদন করেছিল সংস্থাটি। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই কয়েকটি শর্ত আরোপ করে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, চারটি ভিন্ন টিকা উৎপাদনের ক্ষেত্রে সেরাম ইনস্টিটিউটকে চারটি ভিন্ন শর্ত দেওয়া হয়েছে। রাশিয়ার সংস্থা গামালিয়ার সঙ্গে ‘সেল ব্যাংক’ ও ‘ভাইরাস স্টক’ দেওয়া নেওয়ার বিষয়ে সেরামের কী চুক্তি হচ্ছে, তা সরকারের কাছে জমা দিতে হবে। পাশাপাশি, প্রযুক্তিগত আদান প্রদানের কী চুক্তি হচ্ছে, তাও জমা করতে হবে। রাশিয়া কাছ থেকে গবেষণার স্বার্থে কিছু আদান প্রদান করা হলেও সেটা ভারত সরকারকে জানাতে হবে।
শুধু ভারত নয়, বিশ্বের টিকা উৎপাদনের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র মহারাষ্ট্রের পুণের সেরাম ইনস্টিটিউট। কোভিশিল্ড তৈরি করছে এই সংস্থা। অক্সফোর্ডের তৈরি করা এই টিকাটি শুধু ভারতে নয়, সারা পৃথিবীতেই পাঠাচ্ছে সেরাম।
সেই দিক থেকে রাশিয়ার টিকাও সেরামে তৈরি হওয়াটা যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ। জুলাইয়ের শেষ ও আগস্টের শুরু থেকে দেশে দৈনিক এক কোটি টিকা প্রয়োগের কথা বলেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। যদি তা দিতে হয়, তাহলে দেশে দ্রুত টিকা উৎপাদনের হার বাড়াতে হবে।
এদিকে রাশিয়ার তৈরি ভ্যাকসিন স্পুটনিক-৫ করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ৯৭ দশমিক ৬ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে বলে গত এপ্রিল মাসে জানিয়েছিলেন দেশটির বিজ্ঞানীরা। স্পুটনিক-৫ ভ্যাকসিন উদ্ভাবক দলের প্রধান বিজ্ঞানী ডেনিস লোগুনোভ সেসময় বলেন, ৩৮ লাখ মানুষকে দেওয়া ভ্যাকসিনটির দুই ডোজের তথ্য-উপাত্ত মূল্যায়নে কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে ৯৭ দশমিক ৬ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
এছাড়া চলতি বছরের শুরুর দিকে বিখ্যাত মেডিকেল সাময়িকী দ্য ল্যানসেটে রাশিয়ার বিজ্ঞানীদের তৈরি স্পুটনিক-৫ ভ্যাকসিনের বৃহৎ পরিসরের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, রাশিয়ার গামালিয়া ইনস্টিটিউটের এই ভ্যাকসিন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ৯১ দশমিক ৬ শতাংশ কার্যকর। কিন্তু নতুন ফলে কার্যকারিতার সেই হার ৯৭ দশমিক ৩ শতাংশ বলে জানিয়েছেন ডেনিস।