বৈঠকে কিম জং উন বলেন, ‘দেশের খাদ্য পরিস্থিতি বর্তমানে উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌঁছেছে। গত বছর টাইফুন (ঘূর্ণিঝড়) ও বন্যার কারণে কৃষিক্ষেত্রে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল, তার ফলেই এই অবস্থা দেখা দিয়েছে।’
সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ায় খাদ্যপণ্যের দাম আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এনকে নিউজ মূলত উত্তর কোরিয়ার সংবাদ ও সংবাদ বিশ্লেষন প্রকাশ করে থাকে। পত্রিকাটির সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বর্তমানে দেশটিতে এক কেজি কলার দাম ৪৫ ডলার।
পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কিত বিধিনিষেধ না মানার কারণে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে উত্তর কোরিয়ার ওপর। ফলে চীনসহ মুষ্টিমেয় কিছু দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের অনুমতি রয়েছে দেশটির।
এরমধ্যে চীনের সঙ্গে সবেচেয়ে বেশি বাণিজ্য রয়েছে উত্তর কোরিয়ার। খাদ্য, সার ও জ্বালানীর জন্য চীনের ওপর প্রায় নির্ভরশীল দেশটি।
কিন্তু করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সীমান্ত বন্ধ রেখেছে উত্তর কোরিয়া। ফলে চীনের সঙ্গে দেশটির বাণিজ্যও প্রায় তলানিতে ঠেকেছে।
উত্তর কোরিয়ার একাধিক সরকারি কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, চলমান খাদ্য সংকট নিরসনে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে তারা বিস্তারিত আর কিছু বলেননি।
চলতি বছর মার্চ থেকেই খাদ্যাভাব শুরু হয়েছিল উত্তর কোরিয়ায়। এপ্রিলে সরকারের এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে কিম জং উন বলেছিলেন, ‘আমাদের অবশ্যই একে অন্যের প্রতি সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব গড়ে তুলতে হবে। ১৯৯০ সালে যে পরিস্থিতি আমরা পেরিয়ে এসেছি, তার পুনরাবৃত্তি কখনও কাম্য নয়।’
এক সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে বড় আশ্রয়। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার সময় ব্যাপক দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। বিপুল সংখ্যক মানুষ খাদ্যাভাবে মারা গিয়েছিলেন সেই দুর্ভিক্ষে।
তবে এবার উত্তর কোরিয়ায় যে খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে, দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ফের ’৯০-এর বিপর্যয় দেখা দিতে পারে দেশটিতে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে খাদ্যাভাবের কারণে ইতোমধ্যে দেশটির ৩০ লাখ মানুষ মৃত্যুঝুঁকিতে আছেন।
সূত্র: বিবিসি