নেচার বায়োটেকনোলজি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় এমআইটি এবং হার্ভার্ডের গবেষকরা মাস্কটির নকশা সম্পর্কে বলেছেন, এতে অত্যন্ত ক্ষুদ্র এবং নিষ্পত্তিযোগ্য সেন্সর সংযুক্ত করা হয়েছে— কেউ করোনা আক্রান্ত হয়ে থাকলে এই সেন্সর মাত্র ৯০ মিনিটের মধ্যে তা শনাক্ত করবে। একই সঙ্গে সেন্সরটি অন্যান্য মাস্কেও ব্যবহার করা যাবে। তবে একবার ব্যবহারের পর সেন্সরটি ফেলে দিতে হবে।
গবেষকরা বলেছেন, সেন্সরটি কেবলমাত্র ফেস মাস্কেই নয়, বরং ল্যাব কোটের মতো পোশাকেও সংযুক্ত করা যেতে পারে। যা স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের বিভিন্ন ধরনের রোগজীবাণু অথবা অন্যান্য হুমকির সংস্পর্শে আসার বিষয় পর্যবেক্ষণেও সম্ভাব্য নতুন একটি উপায় বাতলে দেবে।
তারা বলেছেন, ফেস মাস্ক সেন্সরটি এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যাতে ব্যবহারকারীরা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হওয়ার পরেই কেবল সেটিকে সক্রিয় করতে পারবেন। ব্যবহারকারীর গোপনীয়তার জন্য ফলাফল মাস্কের ভেতরে থাকবে এবং করোনা সংক্রমিত হয়েছেন কি-না সেটি সেই সময় তিনিই ফল দেখতে পারবেন।
গত বছরের গোড়ার দিকে গবেষকরা পরিধানযোগ্য সেন্সর তৈরির কাজ শুরু করেন; যে সময় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। পরে তারা প্রযুক্তির ব্যবহার করে সার্স-কোভ-২ ভাইরাস শনাক্ত করতে সক্ষম সেন্সর তৈরির সিদ্ধান্ত নেন।
ডায়াগনস্টিক ফেস মাস্ক তৈরির জন্য গবেষকরা ভেজা-শুকনো সেন্সরকে একটি কাগজের মাস্কে সংযুক্ত করেন। গবেষকরা বলেছেন, এই সেন্সরগুলো সিলিকন ইলাস্টোমার দিয়ে বেষ্টিত। সেন্সরগুলোকে মাস্কের ভেতরে স্থাপন করা হয়, যাতে এটি মাস্ক পরা ব্যক্তির শ্বাসের মধ্যে ভাইরাল কণা আছে কি-না তা শনাক্ত করতে পারে।
মাস্কের ভেতরে ছোট একটি জলাধারও আছে; যা পরিধানকারী ব্যক্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হওয়ার পর একটি বোতামে চাপলে সেই জলাধার থেকে পানি সরাসরি সেন্সরে চলে যায়। এটি সেন্সরের হিমায়িত-শুকনো উপাদানগুলোকে শুষে নেয়; যা মাস্কের অভ্যন্তরে জমা শ্বাসের কণা বিশ্লেষণ করে এবং ৯০ মিনিটের মধ্যে ফলাফল জানিয়ে দেয়।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক পিটার এনগুয়েন বলেন, এই পরীক্ষাটি অত্যন্ত সংবেদনশীল পিসিআর পরীক্ষার মতোই। কোভিড-১৯ এর দ্রুত বিশ্লেষণের জন্য যে অ্যান্টিজেন পরীক্ষাগুলো করা হয় এটিও তেমন দ্রুতই পরীক্ষার ফল দেয়।
এমআইটি এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ইতোমধ্যে এই মাস্কের পেটেন্ট পাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আবেদন করেছেন। করোনা শনাক্তকারী সেন্সরের আরও উন্নয়নের জন্য দেশটির একটি কোম্পানির সঙ্গে কাজ শুরুর আশা করছেন তারা। শিগগিরই এটি বাজারে আসতে পারে বলেও আশাপ্রকাশ করেছেন গবেষকরা।
সূত্র: পিটিআই।