মঙ্গলবার এক বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘আমি যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের ওপর থেকে যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশাপাশি, ইরানের প্রতি আহ্বান থাকবে— দেশটির ক্ষমতাসীন সরকার যেন জ্যাকোপার শর্তসমূহ মেনে চলার ক্ষেত্রে আন্তরিক হয়।’
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও চীন— এই ছয় রাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু প্রকল্প নিয়ন্ত্রণ চুক্তি জ্যাকোপা স্বাক্ষর করে ইরান। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইরান ধীরে ধীরে পরমাণু প্রকল্প থেকে সরে আসবে এবং এর পরিবর্তে দেশটির বিরুদ্ধে যেসব আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে— সেগুলো পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।
ইরানের চিরবৈরী হিসেবে পরিচিত দুই দেশ সৌদি আরব ও ইসরায়েল শুরু থেকেই জ্যাকোপার বিরোধিতা করেছে। সেই পথ ধরে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জ্যাকোপাকে ‘ত্রুটিপূর্ণ’, ‘একপেশে’, ‘এর কোনও ভবিষ্যৎ নেই’, ইত্যাদি অভিযোগ তুলে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার পর চুক্তির শর্তগুলো মেনে চলার ব্যাপারে ইরানও উদাসীন হয়ে পড়ে। ফলে চুক্তিতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় এবং কার্যত সুতোয় ঝুলতে থাকে জ্যাকোপা।
এর মধ্যে খবর আসে, চুক্তিতে ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুতের শর্ত থাকলেও ইরান ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করছে। এই সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে জ্যাকোপাতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো। যুক্তরাষ্ট্রের ওপরও চুক্তিতে ফিরে আসতে নতুন চাপ সৃষ্টি হয়।
দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি যদিও বলেছেন, তিনি আন্তরিকভাবে চাইছেন— ভিয়েনার আলোচনা যেন সফল হয়; তবে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ইরানের পক্ষে এ ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ার এখতিয়ার রাখেন দেশটির সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আলী হোসাইনি খামেনি, যিনি দেশটির পররাষ্ট্রনীতির মূল নির্ধারক।
সূত্র: আল জাজিরা