বৃহৎ শিল্পের স্বীকৃতি পেল স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস

বৃহৎ শিল্পের স্বীকৃতি পেল স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস
দেশের ওষুধ খাতের জায়ান্ট স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। প্রথমবারের মতো প্রবর্তিত এ পুরস্কারের বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। পুরস্কারের জন্য সাতটি ক্যাটাগরিতে ২৩টি প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা চূড়ান্ত করে সম্প্রতি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়।

এবিষয়ে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী বলেন, এ স্বীকৃতি অবশ্যই অনুপ্রেরণাদায়ক। আর বর্তমানের মতো একটি বিশেষ সময়ে এ স্বীকৃতি আরো অনেক অগ্রসর হওয়ার স্পৃহা জোগাবে। তবে এ সাফল্যের কৃতিত্ব ও ভাগীদার স্কয়ারের সব কর্মী ও শেয়ারহোল্ডারের। আমাদের সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠানটি আজকের অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে।

২০১৯ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার নীতিমালা প্রণয়ন করে সরকার। ওই বছরের ১ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জাতীয় পুরস্কার-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি নীতিমালাটির অনুমোদন দেয়। শিল্প উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সৃজনশীলতাকে উৎসাহ দিতেই মূলত শিল্প খাতে অবদানের স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেজন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে এ শিল্প পুরস্কারের প্রবর্তন করা হয়।

১৯৮২ সালে দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ জাতীয় ঔষধ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। ওই নীতিমালাই শিল্প খাতটিতে ব্যক্তি উদ্যোগের বিকাশের সুযোগ তৈরি করে দেয়। আর এ নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সফল ভূমিকা ছিল স্থানীয় উদ্যোক্তাদের। এক্ষেত্রে যারা অগ্রণী ভূমিকা রাখেন, তাদের মধ্যে ছিলেন স্যামসন এইচ চৌধুরী। ১৯৫৮ সালে তার হাত ধরেই যাত্রা করে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।

কয়েকজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠা করেন স্যামসন এইচ চৌধুরী। সে সময়ের এ ছোটখাটো উদ্যোগ আজ বিরাট প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। কর্মসংস্থান হয়েছে ২৮ হাজারেরও বেশি মানুষের। বাংলাদেশের বাইরে আফ্রিকার দেশ কেনিয়ায়ও ওষুধ উৎপাদনকারী কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছে স্কয়ার। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির বার্ষিক টার্নওভার ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি।

গত ২৭ জুন জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার ২০২০-এর বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে স্বীকৃতি পাচ্ছে আরো তিনটি প্রতিষ্ঠান। স্কয়ারের পর দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বস্ত্র খাতের জজ ভূঞা টেক্সটাইল মিলস। তৃতীয় অবস্থানে যৌথভাবে আছে তৈরি বস্ত্র ও পোশাক খাতের থার্মেক্স গ্রুপের সহযোগী আদুরী অ্যাপারেলস লিমিটেড। অন্য প্রতিষ্ঠানটি হলো প্যাসিফিক জিনসের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সেল লিমিটেড।

মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতেও স্বীকৃতি পেয়েছে চারটি প্রতিষ্ঠান। প্রথম অবস্থানে যৌথভাবে আছে বস্ত্র ও তৈরি পোশাক খাতের অকো-টেক্স লিমিটেড ও ফুটওয়্যার খাতের ফরচুন সুজ লিমিটেড। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের রহিমআফরোজ রিনিউয়েবল এনার্জি লিমিটেড। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বস্ত্র খাতের মাধবদী ডায়িং ফিনিশিং মিলস লিমিটেড।

ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে স্বীকৃতি পেয়েছে তিনটি প্রতিষ্ঠান। এগুলোর মধ্যে প্রথম অবস্থানে আছে প্লাস্টিক খাতের আমান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে হস্তশিল্প খাতের এসআর হ্যান্ডিক্রাফটস ও তৃতীয় অবস্থানে আছে কৃষি খাতের আলিম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।

মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম অবস্থানে আছে মেসার্স কারুকলা, দ্বিতীয় অবস্থানে ট্রিম টেক্স বাংলাদেশ। আর তৃতীয় অবস্থানে আছে জনতা ইঞ্জিনিয়ারিং। হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম অবস্থানটির দখল নিয়েছে সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেড। দ্বিতীয় অবস্থানে সুপার স্টার ইলেকট্রনিকস লিমিটেড। তৃতীয় অবস্থানের প্রতিষ্ঠানটি হলো মীর টেলিকম লিমিটেড।

হস্ত ও কারুশিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম অবস্থান পাওয়া প্রতিষ্ঠানটির নাম ক্ল্যাসিক্যাল হ্যান্ডমেইড প্রডাক্টস বিডি। দ্বিতীয় অবস্থানের প্রতিষ্ঠানটির নাম আয়োজন। তৃতীয় অবস্থানে থাকা প্রতিষ্ঠানটি হলো সোনারগাঁ নকশি কাঁথা মহিলা উন্নয়ন সংস্থা।

কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম অবস্থানে থাকা প্রতিষ্ঠানটি হলো কুমিল্লা আর্টস অ্যান্ড ক্রাফটস। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা প্রতিষ্ঠানটি হলো রংমেলা নারী কল্যাণ সংস্থা (আরএনকেএস)। তৃতীয় অবস্থানের প্রতিষ্ঠানটির নাম অগ্রজ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কারের নীতিমালা অনুযায়ী, এ পুরস্কার প্রদানের অন্যতম লক্ষ্য হলো সরকারের রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের শিল্পায়নের বিকাশকে দ্রুততর করতে বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করা। এছাড়া বেসরকারি খাতে শিল্প স্থাপন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বিনিয়োগ উৎসাহিতকরণ; পণ্য বহুমুখীকরণ, আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদন ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহ দেয়া এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী প্রযুক্তিনির্ভর পণ্য উৎপাদন করাও এ পুরস্কার প্রদানের উদ্দেশ্য। নীতিমালায় পুরস্কারের আরো যেসব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলো হলো বাজার ব্যবস্থাপনা, রফতানি বৃদ্ধি ও সার্বিক মান ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা; পরিবেশবান্ধব শিল্প স্থাপন করা; কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের নকশা, কৌশল উপস্থাপনার ক্ষেত্রে অনন্য ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য প্রদর্শনে উৎসাহিত করা; শিল্পে উৎপাদিত পণ্য নান্দনিক, শৈল্পিক, শোভাবর্ধক, ব্যবহারিক, ঐতিহ্যবাহী ও উপযোগিতা বৃদ্ধি করার জন্য উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা।

শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম পুরস্কার হিসেবে থাকবে ১৮ ক্যারেটের ২৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণ দ্বারা নির্মিত ক্রেস্ট, সম্মাননাপত্র ও নগদ ৩ লাখ টাকা। দ্বিতীয় পুরস্কার পাওয়া প্রতিষ্ঠান পাবে ১৮ ক্যারেটের ২০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণ দিয়ে নির্মিত ক্রেস্ট, সম্মাননাপত্র ও নগদ ২ লাখ টাকা। তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে থাকবে ১৫ গ্রাম ওজনের ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ দিয়ে নির্মিত ক্রেস্ট, সম্মাননাপত্র ও নগদ ১ লাখ টাকা।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক এমটিও পার্টনারদের নিয়ে বিকাশে কর্মশালা
পাঠাও নিয়ে এলো মার্চেন্টদের জন্য পেমেন্টের দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য সমাধান ‘ইনস্টাপে’
চট্টগ্রাম ও বরিশালে বিকাশ-বিজ্ঞানচিন্তা’র আয়োজনে ‘বিজ্ঞান উৎসব’
সনি এক্সপোর মেয়াদ বাড়লো দুই দিন
নীলফামারী অঞ্চলে ব্র্যাক ব্যাংকের এজেন্ট মিট আয়োজন
বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নে এফআইসিজিএসে অংশ নিলো কমিউনিটি ব্যাংক
রাজশাহীতে কমিউনিটি ব্যাংকের মাধ্যমে ট্রাফিক মামলার ফাইন কালেকশন উদ্বোধন
এবি ব্যাংকের উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচির সমাপনী ও সনদ বিতরণ
রোটারি ক্লাব অব ঢাকা মেগা সিটির প্রেসিডেন্ট হ্যান্ডওভার
মাসুমা রহমান নাবিলার সঙ্গে ভিট বাংলাদেশের চুক্তি