এই সুপারিশের কারণ হিসেবে স্টিয়াকোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে যে, দুই ডোজে অ্যাস্ট্রাজেনেকার দুই টিকার চেয়ে প্রথম ডোজে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও দ্বিতীয় ডোজে ফাইজার-বায়োএনটেক বা মডার্নার টিকা তুলনামূলকভাবে বেশি অ্যান্টিবডি ও টি সেল গঠনে সক্ষম। এ কারণেই এই সুপারিশ করা হয়েছে।’
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান সরকারী স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা ন্যাশনাল হেলথ ইনস্টিটিউট (এনএইচআই) ‘কম্বাইন্ড কোভ ট্রায়াল’ নামে একটি গবেষণা প্রকল্প পরিচালনা করেছে। ৮৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী সেই প্রকল্পে অংশ নেন।
স্বেচ্ছাসেবকদের তিনটি দলে ভাগ করে প্রথম দলকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা ফাইজারের দু’ডোজ টিকা, দ্বিতীয় দলের সদস্যদের প্রথম ডোজে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও দ্বিতীয় ডোজে ফাইজারের টিকা এবং তৃতীয় দলের সদস্যদের প্রথম ডোজে ফাইজার ও দ্বিতীয় ডোজে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হয়।
দু-সপ্তাহ পর স্বেচ্ছাসেবকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখা গেছে, যারা প্রথম ডোজে ফাইজার ও দ্বিতীয় ডোজে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছেন, তাদের চেয়ে যারা প্রথম ডোজে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও দ্বিতীয় ডোজে ফাইজারের টিকা নিয়েছেন- তাদের দেহে অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমাণ অ্যান্টিবডি ও টি সেলের অস্তিত্ব রয়েছে।
তবে, যারা দুই ডোজেই অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা ফাইজারের টিকা নিয়েছেন, তাদের চেয়ে দুই ডোজে দু’কোম্পানির টিকা নেওয়া স্বেচ্ছাসেবকদের দেহে অ্যান্টিবডি ও টি সেলের পরিমাণ বেশি পাওয়া গেছে।
টি সেল হলো একধরনের কোষ- যার মূল কাজ মানব দেহে প্রবেশ করা করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করা এবং এটিকে নিষ্ক্রিয় করা। অনেকের দেহে প্রাকৃতিকভাবেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক টি সেলের অস্তিত্ব থাকে, আবার অনেকের দেহে এর পরিমাণ থাকে প্রয়োজনের তুলনায় অল্প।
বয়স্ক ব্যক্তিদের দেহে সাধারণত টি সেলের পরিমাণ কম থাকে, এ কারণে তাদের করোনায় আক্রান্ত হওয়া, গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকে বেশি।
সাম্প্রতিক গবেষণায় আরও জানা গেছে ফাইজার-বায়োএনটেক ও মডার্নার করোনা টিকা একই প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয়েছে। অন্যদিকে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে সাদৃশ্য আছে জনসন অ্যান্ড জনসনের করোনা টিকার।
জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলও দুই ডোজে দুই কোম্পানির টিকা নিয়েছেন। চ্যান্সেলরের ঘনিষ্ট সরকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রথম ডোজে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও দ্বিতীয় ডোজে মডার্নার টিকা নিয়েছেন তিনি।
সূত্র: এএফপি