মঙ্গলবার (০৫ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে বুধবার (০৬ জুলাই) সকাল ৯টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় যে ২০ জন মারা গেছেন এদের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। এ ছাড়া ১৮ জন করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। করোনা নেগেটিভ হয়েও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় মারা গেছেন একজন।
গত এক দিনে মারা যাওয়া ২০ জনের মধ্যে সাতজনের বাড়ি বিভাগে করোনার হটস্পট রাজশাহী জেলায়। এ ছাড়া পাবনার চারজন, নওগাঁর তিনজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুজন, নাটোরের দুজন, কুষ্টিয়ার একজন এবং মেহেরপুরের একজন মারা গেছেন। করোনা সংক্রমণ ও উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন তারা।
রামেক হাসপাতাল পরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রামেক হাসপাতালের তিনজন করে মারা গেছেন নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র (আইসিইউ), ১৪, ২২ এবং ২৯/৩০ নম্বর ওয়ার্ডে। এ ছাড়া ১, ১৬ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন করে এবং ৪ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে একজন করে মারা গেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে একজন করে মারা গেছেন রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ১৭ জনের মধ্যে রাজশাহীর ছয়জন, চারজন পাবনার, দুজন করে নওগাঁ ও নাটোরের এবং একজন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলার বাসিন্দা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
৪৫৪ শয্যার করোনা ইউনিটে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন ৪৭০ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন ২০ জন। করোনা নিয়ে এ পর্যন্ত ভর্তি রয়েছেন ২০৮ জন। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৮০ জন। করোনা ধরা পড়েনি হাসপাতালে ভর্তি ৮২ জনের নমুনায়। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৬ জন। এই একদিনে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৬৭ জন।
এর আগে মঙ্গলবার (০৬ জুলাই) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ১৮৮ জনের এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাবে ৩৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে রামেক হাসপাতাল ল্যাবে ৪২ ও রামেক ল্যাবে ৭৪ জনের নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীর ২১ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই ২২ জন, ২ জুলাই ১৭ জন, ৩ জুলাই ১৩ জন, ৪ জুলাই ১২ জন, ৫ জুলাই ১৮ জন এবং ৬ জুলাই ১৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন রামেক হাসপাতালে। গত ২৯ জুন করোনা ইউনিটে সর্বোচ্চ ২৫ জন মারা যান। করোনা সংক্রমণ শনাক্তের পর হাসপাতালে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড এটি।
গত বছরের এপ্রিল থেকে এই বছরের জুন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭ হাজার ১৬১ জন রোগী। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন ৫ হাজার ৯২৭ জন। এই ১৪ মাসে মারা গেছেন ১ হাজার ৭৮ জন। এর মধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৪৬ জনের। অন্যদের মৃত্যু হয়েছে উপসর্গ নয়তো অন্যান্য শারীরিক জটিলতায়।