বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সেনা সদর নির্বাচনি পর্ষদ-২০২১ (প্রথম পর্ব) -এ দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় জনগণের সেবক হিসেবে দেশ পরিচালনা করে, শাসক হিসেবে নয়।
শেখ হাসিনা বলেন, শৃঙ্খলাই সেনাবাহিনীর মেরুদণ্ড। সেই সঙ্গে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সৎ, নির্মোহ, ন্যায়পরায়ণ, জনবান্ধব, মানবিক গুণসম্পন্ন এবং সর্বপরি কর্মজীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে সফল অফিসারদের খুঁজে বের করতে হবে। আমি জেনে খুশি হয়েছি যে, সেনাবাহিনীর অফিসারদের পদোন্নতির জন্য টিআরএসিই-ট্রেস (টার্বুলেটেড রেকর্ড অ্যান্ড কম্পারেটিভ ইভাল্যুয়েশন) পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়, যা তাদের পেশাগত দক্ষতার বিভিন্ন দিকের তুলনামূলক মূল্যায়ন প্রকাশ করে।
তিনি বলেন, এর সাথে নির্বাচকম-লীগণ ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের ঊর্র্ধ্বে উঠে, প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণ বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে যোগ্য ব্যক্তিকেই পদোন্নতির জন্য নির্বাচিত করবেন বলে আমার বিশ্বাস। আপনাদের সব প্রভাব থেকে মুক্ত থেকে নিরপেক্ষতার সঙ্গে যোগ্য নেতৃত্ব খুঁজে বের করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন প্রকার নিযুক্তি যেমন-কমান্ড, স্টাফ, প্রশিক্ষকসহ বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ নিযুক্তির জন্য উপযুক্ত অফিসারদের পদোন্নতি দিতে হবে। এতে সবার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, গত সাড়ে ১২ বছরে তার সরকার তিন বাহিনীর ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছে। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সেনাবাহিনীতে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র, সেনা বিমান ও হেলিকপ্টারসহ আধুনিক ইনফ্যান্ট্রি গেজেট, ইঞ্জিনিয়ারিং সরমঞ্জামাদি সংযোজন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তার সরকার বঙ্গবন্ধু প্রণিত প্রতিরক্ষা নীতির ভিত্তিতে নতুন করে ‘জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি, ২০১৮’ প্রণয়ন করেছে, যা মন্ত্রিপরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে।
সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অগ্রগতির মানদণ্ডে বিশ্বের প্রথম ৫টি দেশের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। আমরা দারিদ্র্যের হার ২০ দশমিক ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে এনেছি এবং মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ মার্কিন ডলারে উন্নীত করেছি। আর্থ-সামাজিক সব সূচকে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করেছি।
তিনি বলেন, করোনা মহামারির সময়ও দেশে সব মেগা প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আধুনিক করেছি, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ পাঠিয়েছি। দেশকে আমরা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এ রূপান্তরিত করেছি। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি ছাড়িয়েছে। রূপকল্প-২০২১ এর সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছি।