গ্রাহক কোনো কারণে খেলাপি হলে ওই সময়ের জন্য ঋণের স্থিতি বা কিস্তির বিপরীতে ৯ শতাংশের বাইরে অতিরিক্ত আরও ২ শতাংশ দণ্ডসুদ আরোপ করা যাবে। এর বাইরে ঋণের বিপরীতে অন্য কোনো সুদ বা মুনাফা আরোপ করা যাবে না।
তবে রফতানির ঋণের সুদের হার ৭ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকছে। আর ক্রেডিট কার্ডের বিপরীতে দেয়া ঋণের সুদহার এর আওতায় আসবে না।
সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিট কার্যকর হচ্ছে। এ বিষয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) কাছে পাঠিয়েছে। সার্কুলার জারির পর এক মাসের বেশি সময় পেয়েছে ব্যাংকগুলো প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করার জন্য।
এমন এক সময় এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে যখন করোনার প্রভাবে দেশে সাধারণ ছুটি চলছে। এর মধ্যে সীমিত আকারে ব্যাংকিং সেবা চালু রয়েছে। ঋণ কার্যক্রম বলতে গেলে প্রায় বন্ধ। আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে অফিসিয়ালি ১ এপ্রিল থেকে ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিট কার্যকর হলেও বাস্তবে তা প্রয়োগ হবে সাধারণ ছুটির পর। কেননা এর আগে ব্যাংকিং কার্যক্রম সীমিত আকারে চালু থাকছে।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে ব্যাংকগুলোর আমানত সংগ্রহের সুদ হারের ব্যাপারে কিছুই বলা হয়নি। ফলে ব্যাংকগুলো বাস্তবতা ও প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে সুদের হার নির্ধারণ করতে পারবে। ঋণের সর্বোচ্চ সুদ হার বেধে দিলেও সর্বনিম্ন সুদের হারের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। ফলে ব্যাংকগুলো প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে সুদের হার ৯ শতাংশের চেয়ে কম আদায় করতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সুত্রে জানা যায়, সুদের নতুন হার আজ থেকেই কার্যকর হবে। ব্যাংকগুলো এখন যে ঋণ দেবে সেগুলোতে নতুন সুদহারে দিতে হবে। তবে ব্যাংকগুলোকে এখন চেষ্টা করতে হবে তাদের তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় কমানোর বিষয়ে। এক্ষেত্রে আমানতের সুদ কমাতে হবে, ব্যাংক পরিচালনার অন্যান্য খাতে ব্যয় কমাতে হবে। এভাবে তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় কমিয়ে সুদের হার সমন্বয় করতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, ঋণের সুদের হার কমালেও ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ কমাতে পারবে না। গত তিন বছরে এসএমই, উৎপাদন খাতসহ শিল্প খাতে বিতরণ করা ঋণের গড় হারের চেয়ে কোনোভাবেই চলতি বছরে কম বিতরণ করতে পারবে না। ওই গড় হারের বেশি বিতরণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১৪ মে গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী প্রথমবারের মতো ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে সে নানামুখী তৎপরতার পরও ঋণের সুদের হার কমেনি। সর্বশেষ ২৪ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে সার্কুলার জারি করে।