এ বিষয়ক একটি খসড়া প্রতিবেদন ইতোমধ্যে প্রস্তুত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, যার একটি অনুলিপি বার্তাসংস্থা রয়টার্সের হাতে পৌঁছেছে। চলতি সপ্তাহেই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বিশ্বের দরিদ্র ও অনুন্নত দেশগুলোকে করোনা টিকার ডোজ ও চিকিৎসা উপকরণ সরবরাহ করতে ২০২০ সালে দুটি প্রকল্প শুরু করেছিল ডব্লিউএইচও – কোভ্যাক্স ইনিশিয়েটিভ ও এসিটি-এ (এক্সেস টু কোভিড ১৯ টুলস এক্সিলারেটর)। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে এই দুই প্রকল্পের জন্যই অর্থ সহযোগিতা চাওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
সেখানে বলা হয়েছে, মহামারি পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে মেডিকেল অক্সিজেনের চাহিদা বেড়েছে ১২ গুণেরও বেশি। দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে অনেক দেশ করোনায় আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থ রোগীদের প্রয়োজনীয় অক্সিজেন দিতে পারছে না।
দরিদ্র দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ করতে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এছাড়া অনেক দরিদ্র দেশে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য প্রয়োজনীয় সুরক্ষা উপাদান (পিপিই) ও করোনা টেস্ট উপকরণ ব্যাপক সংকট চলছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘প্রয়োজনীয় সুরক্ষা উপাদান ও করোনা টেস্ট উপকরণের অভাবে একদিকে অনেক দরিদ্র দেশে স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, আবার অন্যদিকে মানুষজন বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে।
স্বাস্থ্যকর্মীদের পিপিই সরবরাহে ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার এবং করোনা টেস্ট উপকরণ সরবরাহবাবদ ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ডব্লিউএইচও।
বাদবাকি ৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার কোভ্যাক্স প্রকল্পের আওতায় দরিদ্র দেশগুলোকে টিকার ডোজ সরবরাহের জন্য বরাদ্দ চেয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্বের অনুন্নত ও দরিদ্র দেশগুলোকে করোনা টিকার ডোজ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা উপকরণ করার জন্য ডব্লিউএইচও যেসব লক্ষ্য নিয়েছিল- সেগুলোর বেশিরভাগই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন- উন্নত দেশসমূহের গৃহীত ‘ভ্যাকসিন রাজনীতি’ ও চিকিৎসা উপকরণ সরবরাহ বিষয়ক রাজনীতির কারণে ডব্লিউএইচওর উদ্যোগ গতিশীল করা যাচ্ছে না।
একদিকে উন্নত দেশসমূহ বিপুল পরিমাণ টিকার ডোজ মজুত করেছে, অন্যদিকে অনেক উন্নত দেশ তাদের অনুগত দরিদ্র দেশগুলোকে টিকা ও চিকিৎসা উপকরণ সরবরাহ করছে বলে অভিযোগ কিরে আসছে ডব্লিউএইচও।
সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলছেন, উন্নত দেশগুলোর এই নীতি গ্রহণের কারণে টিকার ডোজ ও চিকিৎসা উপকরণের সুষম বণ্টন হচ্ছে না। আবার উন্নত দেশসমূহের যুক্তি- ডব্লিউএইচওর মাধ্যমে অনুন্নত দেশগুলোতে টিকার ডোজ ও চিকিৎসা উপকরণ প্রদান অনেক সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
সাম্প্রতিক এই খসড়া প্রতিবেদন সম্পর্কে মন্তব্য প্রত্যাশা করে ডব্লিউএইচওর কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, তবে কোনো কর্মকর্তা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
সূত্র : রয়টার্স