বুধবার (৪ আগস্ট) বিজিএমইএর সভাপতি বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে ভারতীয় হাইকমিশনারের সহযোগিতা চেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেন। বিজিএমইএ কার্যালয় বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে।
বিজিএমইএর সভাপতি চিঠিতে উল্লেখ করেন, করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের কারণে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা লিড টাইম (ক্রয়াদেশ প্রাপ্তি থেকে পণ্য জাহাজীকরণ পর্যন্ত সময়) মেনে পোশাক রপ্তানির চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছেন। বিদেশি ক্রেতারা লিড টাইম সংক্ষিপ্ত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে পণ্য চাচ্ছেন। তবে সরবরাহকারী দেশ থেকে স্বল্প সময়ে কাঁচামাল পাওয়ার ওপরই সেটি অনেকাংশে নির্ভর করছে।
ফারুক হাসান ভারতীয় হাইকমিশনারকে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা তাঁদের প্রয়োজনীয় কাঁচামালের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ভারতে আমদানি করছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত থেকে কাঁচামাল আনতে সময় বেশি লাগছে। বেনাপোলে আমাদের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্টদের কাছে শুনতে পাচ্ছি, নিরাপত্তাসংক্রান্ত ইস্যু ও প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে ভারতের বনগাঁ কাস্টমস পয়েন্টে আমদানি করা কাঁচামাল ছাড় করতে বেশি সময় লাগছে। সে কারণে পোশাকশিল্পের কাঁচামালবাহী প্রচুর পরিমাণ ট্রাক আটকে আছে। তাতে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা ক্ষতির মুখে পড়ছেন।’
হাইকমিশনারকে ভারতীয় অংশের কাস্টমসে পোশাকশিল্পের কাঁচামাল দ্রুত ছাড় করানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, আমদানি-রপ্তানি মসৃণ করা গেলে উভয় দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়বে।
করোনার চ্যালেঞ্জের মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে আগামী গ্রীষ্ম ও বসন্ত মৌসুমের পোশাকের প্রচুর ক্রয়াদেশ আসতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই অনেক প্রতিষ্ঠান আগামী মার্চ পর্যন্ত তাদের কারখানার উৎপাদন সক্ষমতা অনুযায়ী ক্রয়াদেশের বুকিং পেয়ে গেছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের ক্রয়াদেশ সক্ষমতার চেয়েও বেশি।
বিপুলসংখ্যক মানুষকে করোনার টিকা দেওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে। ফলে ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো আগামী গ্রীষ্ম ও বসন্ত মৌসুমে ভালো বিক্রির প্রত্যাশা করছে। সে জন্যই প্রচুর ক্রয়াদেশ আসছে। তা ছাড়া মিয়ানমারে সেনা শাসন ও ভারতে করোনার ভয়াবহতার জন্য কিছু ক্রয়াদেশ স্থানান্তরিত হয়েছে এ দেশে। তার আগ থেকেই চীনের ক্রয়াদেশও বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে আসছিল। সব মিলিয়ে ২০১৯ সালে যখন করোনা ছিল না, তার তুলনায় বর্তমানে ৫-১০ শতাংশ বেশি ক্রয়াদেশ আসছে।
উদ্যোক্তারা জানান, বিদেশি ক্রেতারা পণ্য উৎপাদনে আগের মতো আর বাড়তি সময় দিচ্ছে না। সে কারণে কাঁচামাল সময়মতো পাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নানা জটিলতায় সেটি হচ্ছে না। আবার চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জট ও দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন রপ্তানিকারকেরা।