খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা সুমন মেহেদী স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ভোক্তা পর্যায়ে চালের মূল্য প্রতিকেজি ১০ টাকা নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্য মন্ত্রণালয় পরিচালিত ওএমএস খাতে চালের এক্স গুদাম মূল্য ৮ টাকা এবং ভোক্তা পর্যায়ে ১০ টাকায় পুনর্নির্ধারণ করা হয়। এছাড়াও ৯৬টি কেন্দ্রে ওএমএস এর মাধ্যমে আটা বিক্রির কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। রাজধানীর মোট ৭৩ বস্তির ৩৯,১৮০টি পরিবার এই দামে সপ্তাহে ৫ কেজি করে চাল পাবেন। রবিবর দুটি স্পটে এই চাল বিক্রির কর্মসূচি শুরু হলেও পরে তা ঢাকা মহানগরের অন্য এলাকাগুলোতে সম্প্রসারিত হবে।
এজন্য খাদ্য মন্ত্রণালয় হতে খাদ্য অধিদফতরে পাঠানো এক নির্দেশনায় রাজধানীর ডিলারদের নিচের পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করতে বলা হয়েছে:
১. করোনা ভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সৃষ্ট কর্মহীন মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিশেষ এই ওএমএস কর্মসূচি চলমান ওএমএস (আটা) কর্মসূচির অতিরিক্ত হিসেবে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে;
২. করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিকালীন সময়ে জনসাধারণ গৃহে অবস্থান করায় সব কর্মহীন মানুষকে এর আওতায় এনে এই বিশেষ ওএমএস কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। এর সুফলভোগী হবেন দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, পরিবহন শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, চায়ের দোকানদার, ভিক্ষুক, ভবঘুরে, তৃতীয়লিঙ্গ (হিজরা) সম্প্রদায় অন্য কর্মহীনরা;
৩. কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ভোক্তার বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত মাস্টাররোল (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে মোবাইল নম্বরসহ) সংরক্ষণ করতে হবে;
৪. একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তিকে ভোক্তা হিসেবে নির্বাচন করা যাবে না। এছাড়া, ওই পরিবারের কেউ যদি খাদ্যবান্ধব অথবা ভিজিডি কর্মসূচির উপকারভোগী হয়ে থাকেন তাহলে তিনি এ কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন না;
৫. জেলা ও বিভাগীয় শহরের কেন্দ্রে প্রতি ২ মেট্রিক টন এবং ঢাকা মহানগরের কেন্দ্র প্রতি ৩ মেট্রিক টন করে চাল দৈনিক বিক্রি করা যাবে;
৬. জেলা ও বিভাগীয়/ঢাকা মহানগরীর ওএমএস বরাদ্দের পরিমাণের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ওএমএস কমিটির (জেলা ও বিভাগীয়/ঢাকা মহানগরীর ওএমএস কমিটি) মাধ্যমে বিদ্যমান ওএমএস কেন্দ্রের সংখ্যা ঠিক রেখে বিক্রয়কেন্দ্রের স্থান পুনর্নির্ধারণ করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী, শ্রমজীবীদের বসবাস কেন্দ্রের কাছের বস্তি এলাকায় অথবা পর্যাপ্ত খালি জায়গা আছে এমন স্থানকে অস্থায়ী বিক্রয়কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচন করতে হবে;
৭. ভোক্তা প্রতি ৫(পাঁচ) কেজি চাল বিক্রয় করতে হবে এবং একজন ভোক্তা জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদর্শন করে সপ্তাহে একবার মাত্র ৫(পাঁচ) কেজি চাল ক্রয় করতে পারবেন;
৮. সপ্তাহে ৩ দিন রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা হতে দুপুর ৩ টা পর্যন্ত বিক্রয় কার্যক্রম চালানো হবে;
৯. স্থানীয় প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, সিটি করপোরেশন, পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর বা প্রতিনিধির উপস্থিতি /তদারকিতে বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে;
১০. করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে;
১১. ওএমএস নীতিমালায় বর্ণিত জেলা/বিভাগীয়/ঢাকা মহানগরীর কমিটি সার্বিক বিষয়টি মনিটরিং করবে;
১২. ডিলাররা দৈনিক বিক্রয় প্রতিবেদন তদারকি কর্মকর্তার প্রতিস্বাক্ষর গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট ওএমএস কমিটির সভাপতির কাছে পাঠাবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা মহানগরে মোট ৭৩ বস্তি আছে। এই বস্তিগুলোতে ৩৯,১৮০টি পরিবার আছে। এখানে মোট জনসংখ্যা প্রায় ২ লাখ। ঢাকা জেলা প্রশাসন থেকে জানা যায়, এরা কেউ সরকারের খাদ্য সহায়তা পায়নি। ঢাকা মহানগরে ওএমএস ডিলার কেন্দ্রের সংখ্যা ১২০ টি। এই ডিলারদের তালিকা হতে ২৪ জন ডিলার বাছাই করে সপ্তাহে ৩ দিন পর্যায়ক্রমে ৭৩ বস্তি বা ৩৯,১৮০টি পরিবারকে বিশেষ ওএমএস ৫ কেজি করে চাল বিক্রয় করা হবে। এই সকল কেন্দ্রে কোনও আটা বিক্রয় করা হবে না।
এতে বলা হয়, এছাড়াও আজ শনিবার থেকে যথারীতি ওএমএস এ আটা ১৮ টাকা কেজি দরে বিক্রয় করা হচ্ছে। প্রতি কেন্দ্রে বিক্রি হবে ১ হাজার কেজি আটা। কেন্দ্র সংখ্যা করা হয়েছে ৯৬টি। সপ্তাহের ৬ দিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে।