সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের করোনা টিকা সিনোভ্যাক ও মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি ইনোভিওর ডিএনএ ভিত্তিক করোনা টিকা ইনোভিও এই ট্রায়ালে ব্যবহার করা হবে। ইনোভিওর ট্রায়ালের চীনা অংশীদার প্রতিষ্ঠান সুজহৌ থেকে দেওয়া বিবৃতিতেও এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
সেই অনুযায়ী, এই ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবকদের দুই ডোজে দুই টিকা- সিনোভ্যাক ও ইনোভিও দেওয়া হবে।
করোনা টিকা প্রস্তুতের ক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত তিনটি পদ্ধতি বা প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। প্রথম প্রক্রিয়াটি হলো –মূল উপাদান হিসেবে বিশেষ ভাবে নিষ্ক্রিয় করোনা ভাইরাসের ব্যবহার। চীনের করোনা টিকা সিনোভ্যাক, ভারতের করোনা টিকা কোভ্যাক্সিন এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রস্তুত করা হয়েছে।
দ্বিতীয়টি হলো, করোনা ভাইরাসের সমধর্মী কোনো ভাইরাসকে (অ্যাডিনোভাইরাস) নিষ্ক্রিয় করে টিকার মূল উপকরণ হিসেবে ব্যবহার। স্পুটনিক ৫, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা এই পদ্ধতিতে প্রস্তুত করা হয়েছে।
তৃতীয় পদ্ধতিতে বিশেষ আরএনএ বা ডিএনএ প্রোটিনকে টিকার ডোজের মূল উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না প্রভৃতি টিকা প্রস্তুতের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে।
ইনোভিও ডিএনএ প্রোটিনভিত্তিক করোনা টিকা। তবে এই টিকার আন্তর্জাতিক ট্রায়াল ও কার্যকারিতা বিষয়ক কোনো তথ্য কোথাও ছাপা হয়েছে- এখন পর্যন্ত এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ট্রায়াল যদি সফল হয়, সেক্ষেত্রে ইনোভিও হতে যাচ্ছে চীনে অনুমোদন পাওয়া প্রথম কোনো বিদেশি করোনা টিকা।
বিশ্বে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত ও এ রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল চীনে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। তারপর খুব দ্রুত প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং ২০২০ সালে করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা করতে বাধ্য হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
তবে করোনার উৎস্থল হলেও পরে দীর্ঘমেয়াদী লকডাউন ও কঠোর করোনা বিধিনিষেধ আরোপের মাধ্যমে মহামারি নিয়ন্ত্রণে অনেকটাই সফল হয়েছিল চীন। দেশটির সরকারি ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মহামারির শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত চীনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৯৪ হাজার ৯৬১ জন এবং মারা গেছেন মোট ৪ হাজার ৪৩৬ জন।
তবে করোনার ডেল্টা ধরনের প্রভাবে সম্প্রতি ফের চীনে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।