এ অবস্থায় শনিবার (২৮ আগস্ট) শত শত মানুষ প্রতিবাদ জানাতে কাবুলের রাস্তায় নেমে আসে।
রাজধানী এখন মারাত্মক এক তারল্যের সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ১৫ আগস্ট রাজধানীতে প্রবেশের পর তালেবানদের প্রথম সিদ্ধান্তের একটি ব্যাংক বন্ধ রাখা। আফগান মুদ্রার পতন এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ উত্তোলন রোধ করতে ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান এবং এক্সচেঞ্জ পয়েন্ট বন্ধ করার নির্দেশ দেয় তালেবানরা।
নিরাপত্তার জন্য নাম না প্রকাশ করার শর্তে আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন বর্তমান কর্মচারী গণমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, কারও কাছে টাকা নেই, অনেক পরিবারের কাছে তাদের দৈনন্দিন ব্যয়ের মেটানোর জন্য কোনো অর্থই নেই। অনেকের বেতন-ভাতাও বন্ধ করা হয়েছে।
তবে গতকাল শনিবার রাজধানীর কিছু ব্যাংক পুনরায় খোলার নির্দেশ দিয়েছে তালেবানরা। তবে আফগান সংবাদমাধ্যম জামা প্রেসের তথ্য অনুযায়ী, এখনো ব্যাংক খোলেনি। তাই অনেক মানুষই রাস্তায় নেমেছে। বেসরকারি ব্যাংকের মালিকেরা সেন্ট্রাল ব্যাংক অব আফগানিস্তান (ডিএবি) থেকে আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাঁরা মনে করছেন, সেন্ট্রাল ব্যাংকের নির্দেশ না থাকলে পরে আর্থিক নীতি থেকে বিচ্যুতি হতে পারেন তাঁরা।
এদিকে ডিএবি আজ রোববার ব্যাংকগুলোর উদ্দেশে চিঠি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, তারা ব্যাংক খুলতে পারে, তবে সপ্তাহে ২০০ ডলারের বেশি কেউ উত্তোলন করতে পারবে না। এটি করার মূল কারণ, মানুষ যাতে দৈনন্দিন কেনাকাটা বা প্রয়োজন মেটাতে পারে। তবে যেন একবারে অধিক অর্থ উত্তোলন করতে না পারে।
আফগান অর্থনীতি মারাত্মক সংকটের মধ্যে আছে। বিদেশি সহায়তানির্ভর আফগান অর্থনীতি। তবে তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ায় এই সহায়তা হারাতে হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। এমনকি চীনের মতো সম্ভাব্য মিত্রদেশও তাদের বিনিয়োগ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তায় রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অনুদান আফগানিস্তানের জনসাধারণের ব্যয়ের ৭৫ শতাংশ অর্থায়ন করে।
এদিকে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর প্রথম দিকে আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকটিতে কোনো গভর্নর নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তালেবান নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দিনই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর মার্কিন সামরিক বিমানে করে পালিয়ে যান।
এর আগে ২৩ আগস্ট আফগানিস্তানের ব্যাংকিং অবস্থা নিয়ে স্মারকলিপি পাঠিয়েছে আফগান-আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স। সেখানে সংকটের নানা কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। স্মারকলিপিতে বলা হয়, আফগান ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করতে চাইছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকটির কাছে নগদ অর্থের জন্য আবেদন জানিয়েছিল বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। তবে তাদের সেই আবেদন রাখা হয়নি।