মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
স্পেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় আলমেরিয়া শহরের কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার জানায়, রোববার থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সমুদ্র উপকূলজুড়ে ৮টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতরা সবাই এক বা একাধিক নৌকায় অবস্থান করছিলেন।
তারা জানায়, ২০ কিলোমিটার (১২ দশমিক ৪ মাইল) এলাকাজুড়ে বিস্তৃত উপকূলের বিভিন্ন এলাকা থেকে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। গুয়ার্দিয়া পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত করছে বলেও জানিয়েছে আলমেরিয়া শহর কর্তৃপক্ষ।
আলজাজিরা জানিয়েছে, অভিবাসীদের বহনকারী ওই এক বা একাধিক নৌকা হয়তো মরক্কো বা আলজেরিয়া থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর আশায় মৃত্যুর আগে তারা হয়তো পশ্চিম ভূমধ্যসাগর দিয়ে কমপক্ষে ২০০ কিলোমিটার (১২৪ মাইল) পাড়ি দিয়েছিলেন।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্পেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর সমুদ্র পাড়ি দিয়ে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ৭০১ জন অভিবাসী ও শরণার্থী দেশটির মূল ভূখণ্ডে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন। গত বছরের এই একই সময়ের তুলনায় যা ১ হাজার ৬৮০ জন বেশি।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, অত্যন্ত বিপজ্জনকভাবে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টায় চলতি বছরের প্রথম থেকে এই রুটে কমপক্ষে ২৩৮ জন মারা গেছেন।
এদিকে গত জুলাই মাসের মাঝামাঝিতে নতুন এক প্রতিবেদনে আইওএম জানিয়েছিল, বিপজ্জনক সমুদ্রপথ পেরিয়ে ইউরোপে পাড়ি জমানোর চেষ্টার সময় সাগরে ডুবে অভিবাসনপ্রত্যাশী ও শরণার্থীদের মৃত্যুর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
সংস্থাটি সেসময় জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত কমপক্ষে এক হাজার ১৪৬ জন মারা গেছেন। ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপে পাড়ি জমানোর চেষ্টাকারী মানুষের সংখ্যা ৫৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে মধ্য-ভূমধ্যসাগরে ‘লিবিয়া থেকে ইতালি’ যাওয়ার পথটি ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী। এই পথে ডুবে মরেছে ৭৪১ জন। এরপর আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিম আফ্রিকা থেকে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপের পথ ছিল দ্বিতীয় প্রাণঘাতী; এই পথে মারা গেছেন কমপক্ষে ২৫০ জন।
এছাড়া পশ্চিম ভূমধ্যসাগরের স্পেনমুখী পথে ওই সময় পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছিলেন কমপক্ষে ১৪৯ জন এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগরের গ্রিসের পথে মৃত্যু হয় ৬ জনের।