জানা যায়, বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ সপ্তাহব্যাপী পুঁজিবাজারের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার ও বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ডিএসই’র চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমানের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. এম. মোশাররফ হোসেনের সাথে সাক্ষাৎ করেন। ডিএসই’র প্রতিনিধিদলের মধ্যে ছিলেন ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূইয়া, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম. সাইফুর রহমান মজুমদার, প্রোডাক্ট এন্ড মার্কেট ডেভেলপমেন্টের প্রধান সৈয়দ আল-আমিন রহমান, পিআর প্রধান মো. শফিকুর রহমান, কমপ্লায়েন্স এন্ড মনিটরিং বিভাগের প্রধান শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, মার্কেট ডেভেলপমেন্ট বিভাগের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মুনিরুজ্জামান মিয়া।
এসময় ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূইয়া বলেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) “To Ideate Securities Investor’s Protection Insurance” শীর্ষক এক সেমিনার আয়োজন করতে যাচ্ছে। বিষয়টি সম্পূর্ণ নতুন এবং ভিন্ন ধরণের হওয়ায়, অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতার আলোকে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সাথে অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং দেশের পুঁজিবাজারে কীভাবে তা কার্যকর করা যায় তা তুলে ধরেন।
তিনি আরও বলেন, সামাজিক উন্নয়নে আমরা এগিয়ে থাকলেও অর্থনৈতিক উন্নয়নে কিছুক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি। সকলের উদ্ভাবনী চিন্তাধারাকে কাজে লাগিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর আগেই আমরা পুঁজিবাজার স্বার্থে অনেক কিছু করতে চাই।
বৈঠকে ডিএসই’র চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা বলছি ইমারজিং টাইগার। সব কথাগুলো যথাযথ। তারপরও উন্নয়নের ক্ষেত্রগুলো নির্ণয় করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এখন পর্যন্ত আমরা ফিনান্সিয়াল সেক্টরে আশানুরূপ উন্নয়ন করতে পারিনি। আমাদের প্রধান প্রধান উন্নয়নসূচক হল শিক্ষার সুযোগ, স্বাস্থ্য সেবার সুযোগ, শিশু মৃত্যুহার হ্রাস, মাতৃ মৃত্যুহার হ্রাস, নারীর ক্ষমতায়ন ও সেনিটেশন। এসব কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশের পক্ষ থেকে বিদেশে প্রশংসিত হয়েছেন। এই কাজগুলো হয়েছে বর্তমান সরকারের সঠিক নেতৃত্ব এবং সিদ্ধান্তের ফলে। আমাদের সমাজের প্রান্তিক জনগণের কারণেই অর্জনগুলো সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী প্যানডেমিক পরিস্থিতির মধ্যেও আমাদের খাদ্য সরবরাহের কোনো ঘাটতি হয়নি। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা তিন ধরনের সমন্বিত প্রচেষ্টায় সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম হচ্ছেন কৃষক, দ্বিতীয়তঃ দক্ষ শ্রমিক বাহিনী এবং তৃতীয়তঃ গার্মেন্টস্ শ্রমিক। তাহলে বলা যায় যে বিগত দেড় দশকে যে উন্নয়ন হয়েছে তা আমাদের প্রান্তিক জনগণের কারণেই হয়েছে।
এছাড়াও ডিএসই’র চেয়ারম্যান বলেন, “বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রভাগে রয়েছে সামাজিক খাত। সামাজিক খাতের অনেক সূচকেই আমরা আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোকে বিশেষ করে পাকিস্তানকে অতিক্রম করেছি। কিছু সূচকে আমরা ভারতকেও অতিক্রম করেছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে আজকের আলোচ্য বিষয় অর্থাৎ পুঁজিবাজারের ক্ষেত্রে আমরা ভারত থেকে অনেক বেশী এবং পাকিস্তান থেকেও কিছুটা পেছনে রয়েছি।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. এম. মোশাররফ হোসেন বলেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলছে। বর্তমানে ডিএসইতে ৫১টি বীমা কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এই তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বীমা কোম্পানিগুলো সব ধরনের সুরক্ষা বা সেবামূলক কাজ করে চলেছে।
এছাড়াও তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় ডিএসই’র নতুন উদ্যোগ অত্যন্ত সময়য়োপযোগী ও বাস্তবধর্মী একটি পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপকে আমি স্বাগত জানাই। সম্পূর্ণ নতুন এবং ভিন্ন ধরনের বিষয় হওয়ায় বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ডিএসই’র এই উদ্যোগকে সর্বোচ্চ সর্বোচ্চ গরুত্বদিয়ে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে পারলে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীগণ যেমন উপকৃত হবে এবং পুঁজিবাজারের প্রতি তাদের আস্থা বৃদ্ধি পাবে।
বৈঠকে সর্বসম্মতিভাবে বিএসইসি, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ, ডিএসই, সিএসই, সাধারণ বীমা কর্পোরেশন এবং সিডিবিএলের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্য মইনুল ইসলাম, সাধারণ বীমা কর্পোরেশন-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শাহ্রিয়ার আহসান এবং ডিএসই’র প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম. সাইফুর রহমান মজুমদার।