‘শেয়ারবাজারের সবচেয়ে বড় সমস্যা কাঠামোগত দূর্বলতা’

‘শেয়ারবাজারের সবচেয়ে বড় সমস্যা কাঠামোগত দূর্বলতা’
শেয়ারবাজারের সবচেয়ে বড় সমস্যা কাঠামোগত দূর্বলতা। বাজারে যে পরিমাণ লেনদেন হয়, তার প্রায় ৮০ শতাংশই ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী কম। কিন্তু অন্যান্য শেয়ারবাজারে পুরো উল্টো। ধরেন মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জ, করাচি স্টক এক্সচেঞ্জসহ আমাদের অঞ্চলের বিভিন্ন স্টক এক্সচেঞ্জ। লন্ডন, নিউইয়র্কের মতো বড়দের কথা না হয় বাদ-ই দিলাম বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

মঙ্গলবার (০৫ অক্টোবর) বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন (বিএমবিএ) আয়োজিত ‘শেয়ারবাজারের উন্নয়নে বিনিয়োগ শিক্ষার গুরুত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন বিএমবিএ সভাপতি ছায়েদুর রহমান।

তিনি বলেন, বর্তমান শেয়ারবাজার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কারেকশন হয়। তারপরে আবার বাড়ে। এটা স্ট্যাবল বৃদ্ধি। এটি অর্থনীতি বৃদ্ধির কারনে বাড়ছে। এটাও শিক্ষার ব্যাপার। কিন্তু অনেকেই সূচক বাড়তে দেখে না বুঝে বিরুপ মন্তব্য করেন। তারা সূচক বেড়ে গেছে দেখে ঝামেলা হতে পারে বলে মন্তব্য করেন।

সালমান এফ রহমান বলেন, আমরা সূচকে আটকে গেছি। কিন্তু সূচক ওতোটা গুরুত্বপূর্ণ না। তবে একবারেই গুরুত্বপূর্ণ না, সেটা আমি বলব না। তবে আমাদের দেখা উচিত অর্থনীতির সঙ্গে শেয়ারবাজার কতটা উন্নতি হচ্ছে। জিডিপির সঙ্গে সূচকের বাড়াটা স্বাভাবিক।

তিনি বলেন, আমাদের শেয়ারবাজারের মূল্যসূচকটি যেনো হঠাৎ করে উপরে না চলে যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ধাপে ধাপে বাড়লে সমস্যা নেই। কিন্তু হঠাৎ বেড়ে গেলে ধস নামে। যেটা ১৯৯৬ ও ২০১০ সালে হয়েছে। তখন সূচক শুধু বাড়তেই ছিল। কোন কারেকশন হচ্ছিল না। যে কারনে হঠাৎ করে ধস নামে।

তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগ শিক্ষাটা খুবই দরকার। সেটা শুধু ব্যক্তি বিনিয়োগকারী না, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে পেশাদারিত্ব আনতে হবে।

এই উপদেষ্টা বলেন, শেয়ারবাজারের বেসিক জিনিস না বুঝেও অনেকে এখানে বিনিয়োগে আসতে চায়। ধরেন মূল্য-আয় (পিই) অনুপাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এছাড়া একটি শেয়ারের নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) কত বা শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস)কত ছিল, গত কয়েক বছরের ট্রেন্ড কি ছিল। এগুলো মৌলভিত্তি তথ্য।

তিনি বলেন, এখন কেউ যদি উচ্চ পিইতে শেয়ার কিনেন, তবে হ্যা কিনতে পারেন। উচ্চ পিইতে যে কিনবে না- এমনতো না। তবে জেনে-শুনে কিনতে হবে। হয়তো কোম্পানির এমন কোন খবর আছে, যাতে করে ভবিষ্যতে ইপিএস বাড়বে এবং পিই কমে আসবে। এখন এই শিক্ষাটা কে দেবে। এক্ষেত্রে ব্রোকারদের সহযোগিতা করা উচিত।

বিদেশে প্রতিটি কোম্পানি নিয়ে বিশ্লেষন করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এটা আমাদের দেশেও করা যেতে পারে। যা মার্চেন্ট ব্যাংক করতে পারে। এ তথ্য বিনিয়োগকারীদেরকে বিনিয়োগে সহযোগিতা করবে। তবে একটি নিয়মের মধ্য দিয়ে করতে হবে। যাতে কেউ ভুল পথে চালিত করতে না পারে।

সালমান এফ রহমান বলেন, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতকে শক্তিশালী করা দরকার। এবার ফান্ডগুলো ভালো রিটার্ন দিয়েছে। এই খাতটিকে শক্তিশালী করলে একজন বিনিয়োগকারীর যদি মার্কেটের সর্ম্পক্যে ধারনা না থাকে, সেও ওখানে বিনিয়োগ করে রিটার্ন পাবে।

তিনি বলেন, আমাদের শেয়ারবাজারের আরেকটি দূর্বলতা হচ্ছে বন্ড মার্কেট নেই। এটি খুবই দরকার। বাজারে দুই ধরনের বিনিয়োগকারী থাকে। যাদের একটি গ্রুপ ফিক্সড ইনকামের সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করতে চায়। অন্যান্য দেশে ইক্যুইটি মার্কেটের থেকে ৩-৪ গুণ বেশি বন্ড মার্কেট। তাই আমাদেরকে বন্ড মার্কেটি ভাইব্রেন্ট করতে হবে।

অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএমবিএর প্রথম সহ-সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান। আর আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডিবিএ সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন ও ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের সভাপতি হাসান ইমাম রুবেল।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত