সংস্থার রোগ প্রতিরোধবিষয়ক কৌশলগত উপদেষ্টা প্যানেলের একাধিক সদস্য বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছন। তারা আরও বলেছেন, যাদের বয়স ষাটের বেশি এবং টিকার দুই ডোজ নেওয়ার পরও পর্যাপ্ত প্রতিরোধী শক্তি দেহে গঠিত হয়নি, তাদেরকে তৃতীয় ডোজ দেওয়া যেতে পারে এবং এক্ষেত্রে বেছে নেওয়া যেতে পারে ডব্লিউএইচওর অনুমোদিত যে কোনো করোনা টিকা।
গত আগস্টের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমের বিভিন্ন দেশ এবং ইসরায়েলে শুরু হয়েছে নাগরিকদের করোনা টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ প্রদান কর্মসূচি। করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টার ছড়িয়ে পড়া রুখতে এই কর্মসূচি শুরু করেছে এসব দেশ।
তবে শুরু থেকেই ঢালাওভাবে সবাইকে বুস্টার ডোজ দেওয়ার বিরোধিতা করে আসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেছেন, বিশ্বে এ পর্যন্ত উৎপাদিত করোনা টিকার ৭৫ শতাংশ ইতোমধ্যে ব্যবহার করে ফেলেছে বিশ্বের ধনী দেশগুলো এবং তাদের অতিরিক্ত চাহিদার কারণে বর্তমানে বিশ্বজুড়ে করোনা টিকা বণ্টনে যে অসাম্য দেখা দিয়েছে, তা আরও তীব্র করে তুলবে এই বুস্টার ডোজ কর্মসূচি।
সংস্থার টিকা বিভাগের প্রধান কেট ও’ব্রায়েন সোমবার সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় ডব্লিউএইচওর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সম্পর্কে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা মনে করি, টিকার দুই ডোজ নেওয়ার পরও যেসব বয়স্ক মানুষের দেহে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধী শক্তির অনুপস্থিতি রয়েছে, শুধু তাদেরকেই টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ দেওয়া উচিত।’
এদিকে, ডব্লিউএইচওর সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৬০ বা তার অধিক বয়সী ব্যক্তিদের বেলায় চীনের করোনা টিকা সিনোফার্ম ও সিনোভ্যাক প্রয়োজনীয় প্রতিরোধী ক্ষমতা গঠনে প্রায়ই ব্যার্থ হয়েছে।
ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞ প্যানেলের অন্যতম সদস্য জোয়াশিম হোমব্যাচ সম্প্রতি সাংবাদিকদের জানান, সম্প্রতি এক গবেষণায় তারা দেখতে পেয়েছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত অন্যান্য দুই ডোজের টিকার তুলনায় চীনের করোনা টিকা সিনোফার্ম ও সিনোভ্যাক বয়স্ক ব্যক্তিদের দেহে কম প্রতিরোধী শক্তি উৎপাদন করে।
সাংবাদিকদের হোমব্যাচ বলেন, ‘আমরা চীনের কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি ইতোমধ্যে অবহিত করেছি এবং আশা করছি, তারা নিজেদের টিকাগুলোর উন্নয়ন করবেন।’