যদিও ১৯তম ওভারের শেষ বলে ডোয়াইন ব্রাভোকে সোজা ব্যাটে খেলতে গিয়ে ৪৪ রান করে জেসন হোল্ডারের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন লিটন। শেষ ওভারে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। ৫ বল শেষে সেই সমীকরণ দাঁড়ায় ১ বলে ৪ রান। যদিও শেষ বলটি ব্যাটেই লাগাতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। ফলে ৩ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশকে।
ওপেনিংয়ে বাংলাদেশ দলের ভঙ্গুর দশার নিয়মিত চিত্র। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দলের সব কম্বিনেশন ভেঙে সাকিব আল হাসানকে ওপেনিংয়ে খেলানো হয়। শুরুটা দারুণ হলেও এই জুটি লম্বা হতে দেননি আন্দ্রে রাসেল। তিনি সাকিবকে জেসন হোল্ডারের ক্যাচ বানিয়ে আউট করেন ব্যক্তিগত ৯ রানে। এই রানের জন্য ১২ বল খেলেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
সাকিবের বিদায়ের পর নাইমও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তিনি জেসন হোল্ডারের গুড লেন্থের বলে বোল্ড হন ১৯ বলে ১৭ রান করে। চার নম্বরে নামা সৌম্য সরকার দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন লিটন দাসকে। এই দুজনে মিলে তৃতীয় উইকেটে যোগ করেন ৩১ রান। ভালো শুরুর পরও সৌম্য ১৩ বলে ১৭ রান করে আকিল হোসাইনের বলে শর্ট থার্ড ম্যান অঞ্চলে ক্যাচ দেন ক্রিস গেইলের হাতে। এরপর মুশফিক দ্রুত ফিরে গেলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। লিটন-মাহমুদউল্লাহ জয়ের কিছুটা আশা জাগালেও তীরে এসে তরী ডোবায় বাংলাদেশ।
এর আগে এই ম্যাচে প্রতিপক্ষের আমন্ত্রনে ব্যাটিং করতে নেমে সাবধানী শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম দুই ওভারে বাংলাদেশের বোলারদের দেখে শুনে খেললেও তৃতীয় ওভারে এসে উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে তুলে মারতে গিয়ে মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ তুলে দেন এভিন লুইস। এর এক ওভার পর শেখ মেহেদীর বলে বোল্ড হন গেইল। ৪ রান করেন এই ওপেনার। পাওয়ার প্লে’তে ২ উইকেট হারানো দলটির স্কোরবোর্ডে যোগ হয় ২৮ রান। সপ্তম ওভারে রস্টন চেজের ক্যাচ ছাড়লেও মেহেদীকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অফে সৌম্য সরকারের হাতে ধরা পড়েন শিমরন হেটমায়ার। ৯ রান করে আউট হন তিনি।
৩ ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন কাইরন পোলার্ড। চেজের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে নিয়ে যান ৫০ এর ওপর। তবে দলীয় ৬৩ রানে স্বেচ্ছায় অবসরে যান ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক। কিন্তু তাতেও বিপদ কাটেনি তাদের। পরের বলেই তাসকিনকে সোজা ড্রাইভ করেন চেজ। কিন্তু বোলারের পায়ে লেগে বল স্টাম্পে আঘাত হানে।
কোন বল না খেলেই রান আউট হন আন্দ্রে রাসেল। এরপরের ওভারে চেজকে ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু মেহেদি ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি। রাসেল ফেরার পর চেজের সঙ্গে জুটি বাঁধেন নিকোলাস পুরান। এই দুজনের ব্যাটে ১৭ ওভারে দলীয় ১০০ তে পৌছায় ক্যারিবিয়ানরা। এর আগের ওভারে সাকিবকে ২ ছক্কা হাঁকান পুরান। ১৮তম ওভারে মেহেদির বিপক্ষে আরও বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন তিনি।
ওভারের প্রথম ৩ বলে ২ ছক্কা হাঁকান বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ওভার শেষে পোলার্ডবাহিনীর সংগ্রহ দাঁড়ায় ১১৯ রান। পরের ওভারের প্রথম বলে শরিফুলকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হন পুরান। ২২ বলে ৪০ রান আসে তার ব্যাট থেকে।পরের বলেই চেজের স্টাম্প ভেঙে দেন এই তরুণ। ২ বলে ২ উইকেট তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেন বাঁহাতি এই পেসার। তবে পরের বলে হোল্ডারকে আর আউট করতে পারেননি শরিফুল। যদিও পঞ্চম বলে আরও একটি উইকেট নেয়ার সুযোগ ছিল তার। তবে আফিফ হোসেন হোল্ডারের ক্যাচ তালুবন্দি করতে পারেননি।
শেষ ওভারের প্রথম বলে ডোয়াইন ব্রাভোকে ফিরিয়ে দেন মুস্তাফিজ। তবে এরপরের ২ বলে জোড়া ছক্কা হাঁকান হোল্ডার। তাতে তাদের রান পৌঁছে যায় ১৩৫ এ। পঞ্চম বল পোলার্ড মিস করলে শেষ বলে ছক্কা হাঁকান তিনি। শেষ ওভারে আসে ১৯ রান। শেষ ৩৬ বলে আসে ৭২ রান।