ট্রায়ালের ফলাফলে দেখা যায়, কোভিড-১৯ সারাতে ফাইজারের ওষুধ তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী মার্কের তৈরি মলনুপিরাভিরের চেয়েও বেশি কার্যকর। মার্কের ওষুধটি করোনায় আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি বা রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি অর্ধেকে নামাতে সক্ষম। সেই তুলনায় ফাইজারের প্যাক্সলোভিডের কার্যকারিতা প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি।
রয়টার্সের খবর অনুসারে, চলতি বছরের শেষের দিকে মার্কিন নীতিনির্ধারকদের অনুমোদন পেতে পারে ফাইজারের ওষুধটি। তারা আগামী ২৫ নভেম্বরের আগেই প্রাথমিক ট্রায়ালের ফলাফল মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) হাতে তুলে দেবে বলে জানিয়েছে।
ফাইজারের ওষুধ পেতে উন্মুখ হয়ে রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। তিনি বলেছেন, এফডিএ’র অনুমোদন পেলে আমাদের কাছে শিগগিরই এমন ওষুধ থাকবে, যা ভাইরাসে আক্রান্তদের সুচিকিৎসা দেবে। করোনার নিকৃষ্ট ফলাফল থেকে মানুষকে রক্ষায় এটি আমাদের আরেকটি হাতিয়ার হবে।
মূলত রিটোনাভির নামে একটি পুরোনো অ্যান্টভাইরাল ওষুধের সংমিশ্রণে তৈরি করা হয়েছে ফাইজারের প্যাক্সলোভিড। কোভিড-১৯ সারাতে দৈনিক এর তিনটি ট্যাবলেট খেতে হবে।
ফাইজারের প্রধান নির্বাহী আলবার্ট বোরলা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তারা অন্তত ৯০টি দেশের সঙ্গে প্যাক্সলোভিড সরবরাহের বিষয়ে কথা বলছেন। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য যত দ্রুত সম্ভব বিশ্বের সবার কাছে এটি সহজলভ্য করা।
বোরলা জানান, ধনী দেশগুলোতে ফাইজারের ওষুধের দাম মার্কের ওষুধের দামের কাছাকাছি রাখা হতে পারে। তবে দরিদ্র দেশগুলোর জন্য ফাইজার ভিন্ন কিছু নীতি বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে, মলনুপিরাভিরের পাঁচ দিনের কোর্সের মূল্য প্রায় ৭০০ ডলার। তবে তাদের আগেই গত বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে এ ওষুধ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
করোনার মহামারি নির্মূলে ফাইজার ও মার্ক উভয়ের ওষুধের জন্যই বিশ্ববাসী অধীর আগ্রহ নিয়ে রয়েছে। তবে তাদের কারও ট্রায়ালেরই পূর্ণাঙ্গ তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফাইজার ও মার্কের ট্যাবলেট আসলেও টিকা নেওয়াই থাকবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের সবচেয়ে সেরা উপায়। ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ এই মহামারি দু’বছরেরও কম সময়ে অর্ধকোটির বেশি মানুষের প্রাণ কেড়েছে। এর মধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই মারা গেছে সাড়ে সাত লক্ষাধিক। সূত্র: রয়টার্সের।