মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘অন্যায় করলে তার বিচার হবেই, সে যেই হোক। এ রায়ের মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হচ্ছে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এটা খুব প্রয়োজন ছিলে। বাট আই অ্যাম নট হ্যাপি। কারণ তিনি বিচার বিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। উনি প্রধান বিচারপতি ছিলেন, আমি একজন আইজীবী। আমি বিচার বিভাগের সঙ্গে সারাজীবন সম্পৃক্ত, আমার জন্য এটা সুখকর হতে পারে না।’
বিরোধীরা বলছেন সরকারের কথার বাইরে না গেলে সিনহাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হতো না- এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘কথাটা একেবারেই সত্য নয়। যারা এমন কথা বলছেন, তারা সরকারের শুধুই সমালোচনা করার জন্য এগুলো বলে বেড়াচ্ছেন। এ ধরনের কথাবার্তার কোনো সারমর্ম নেই।’
আনিসুল হক আরও বলেন, ‘যে কোনো সাংবিধানিক পদ বা গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদে থাকলে তার কর্মকাণ্ডের হিসাব দিতেই হবে। সেক্ষেত্রে আমার মনে হয়, এটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। ট্রান্সপারেন্সি ও অ্যাকাউন্টিবিলিটি সব সময় মেইনটেইন করা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘অন্যায় করলে শাস্তি পেতে হবে। অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে, আদালত বিচার করেছেন। ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত আমরা দেখেছি, এ দেশে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হলেও কোনো মামলা হয়নি। এ সংস্কৃতি থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি। পর্যায়ক্রমে বঙ্গবন্ধু হত্যা, জেলহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধসহ অন্যান্য দুর্নীতির মামলার বিচার হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে।’
এছাড়াও তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন অপরাধ কোনো বিচারপতি করেননি। সেজন্য এমন বিচার করার প্রয়োজন হয়নি। অন্যায় হলে নিশ্চয়ই বিচার হতো। পৃথিবীতে এমন বিচারের অনেক নজির আছে। যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে দেখুন, সেখানে প্রধান বিচারপতিকে বিলোটিং করা হয়েছে। সেটা এখানে বড় কথা নয় এবং সেটাকে উদাহরণ হিসাবেও আনা উচিত নয়।’
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহাকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এরমধ্যে মানি লন্ডারিংয়ে সাত এবং অর্থ আত্মসাৎ মামলায় চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ রায় ঘোষণা করেন। দুই ধারার সাজা এক সঙ্গে চলবে বলে ১৮২ পাতার রায়ে উল্লেখ করেন বিচারক। এছাড়া এস কে সিনহার ৭৮ লাখ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।