বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের আওতাধীন কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড নতুন আঙ্গিকে এ পণ্য বাজারজাত শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) শিল্পমন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানায় পণ্য বৈচিত্র্যকরণ এবং দেশীয় পণ্যের বাজার তৈরিতে সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করেছে শিল্পমন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসেবে সম্প্রতি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ঠেকাতে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি প্রথম বাজারে নিয়ে আসে কেরুজ হ্যান্ড স্যানিটাইজার। হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদনের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি কৃষি উৎপাদন বাড়াতে পরিবেশবান্ধব জৈব সার ‘সোনার দানা’ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে।
অন্যদিকে, শিল্পমন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন টিউবস এলইডি লাইট উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড পরীক্ষামূলকভাবে ডাবল কেবিন পিকআপ সংযোজন শুরু করেছে।
কেরুর মূল পণ্য হচ্ছে আখ থেকে উৎপাদিত চিনি। তবে আখ থেকে চিনি আহরণের পর যে উপজাত (চিটাগুড়, ব্যাগাস ও প্রেসমাড) পাওয়া যায়, তা থেকে জৈব সার উৎপাদিত হয়। অ্যাসিটিক অ্যাসিড ও পানির মিশ্রণে তৈরি চিনি বা ইথানলকে গাজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অ্যাসিটিক এসিডে পরিণত করা হয়, যাকে সিরকা বা ভিনেগার বলা হয়। সারা বিশ্বেই এর ব্যবহার রয়েছে। মাছ বা মাংসের বাড়তি গন্ধ দূর করতে এটি অত্যন্ত কার্যকর। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের রান্নায় ভিনেগার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ।
হালকা ধরনের খাবার তৈরিতে যেমন স্যুপ বা বীজ জাতীয় খাবারে এর ব্যবহার বেশি দেখা যায়। এ ছাড়া খাবার সংরক্ষণ, সবজি রান্না, সালাদ ড্রেসিং করা হয় ভিনেগার দিয়ে। এটি শরীরের বাড়তি চর্বি কাটতে সাহায্য করে।
কেরুর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবু সাঈদ বলেন, ‘কেরুতে দুই ধরনের ভিনেগার উৎপাদিত হয়। সাদা ভিনেগার ও মল্টেড ভিনেগার। ১৯৯৫-৯৬ সাল থেকে কেরুর ফার্মাসিউটিক্যাল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে ডিস্টিলারি সহায়ক পণ্য শাখা স্থাপন করে ভিনেগার উৎপাদন শুরু হয়।
উক্ত কারখানায় ভিনেগারের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা সর্বোচ্চ ৩০ (ত্রিশ) হাজার লিটার। প্রতি ৪৫০ মিলিলিটারের বোতল ৫০ টাকা ও ৭৫০ মিলিলিটারের বোতল ৮০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
খাদ্যকে জীবাণুমুক্ত করতে ভিনেগার অত্যন্ত কার্যকর। সম্প্রতি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ঠেকাতে বাজারে জীবাণুনাশক হ্যান্ড স্যানিটাইজারের পাশাপাশি ভিনেগারে চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাজার চাহিদা মেটাতে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং ভিনেগারের উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। উল্লেখ্য, চিনি ও ডিস্টিলারি পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে ১৯৩৮ সালে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড প্রতিষ্ঠিত হয়।