এর আগে গত ৮ নভেম্বর ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তৃতীয় প্রান্তিকের আার্থিক ফলাফল ঘোষণা করা হয়। স্থানীয় ও বিদেশী বিনিয়োগ বিশ্লেষক, পোর্টফোলিও ম্যানেজার ও পূজিঁবাজার বিশেষজ্ঞবৃন্দ অনুষ্ঠানে অংশ নেন যা ব্যাংকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ব্যাংক এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম আর. এফ. হোসেন, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) অ্যান্ড সিএফও এম. মাসুদ রানা, ডিএমডি অ্যান্ড সিওও মো. সাব্বির হোসেন, ডিএমডি অ্যান্ড হেড অব কর্পোরেট ব্যাংকিং তারেক রেফাত উল্লাহ খান, ডিএমডি এন্ড হেড অব এসএমই ব্যাংকিং সৈয়দ আব্দুল মোমেন, হেড অব রিটেইল ব্যাংকিং মো: মাহীয়ুল ইসলাম এবং হেড অব ট্রেজারি এন্ড এফআই মো. শাহীন ইকবাল এবং হেড অব ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভিন্ন সেগমেন্টের আর্থিক ফলাফল তুলে ধরেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
তৃতীয় প্রান্তিকের উল্লেখযোগ্য সাফল্য:
•আর্নিংস পার শেয়ার (ইপিএস) স্ট্যান্ডঅ্যালন ভিত্তিতে ০.৯৯ টাকা ও কন্সোলিডেটেড ভিত্তিতে ১.০২ টাকা
•কৌশলগত সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে লোন ও অ্যাডভান্স ডিসেম্বর, ২০২০ এর তুলনায় ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এসময় রিটেইল ব্যবসা অর্জনে অগ্রগামী ছিল এবং কর্পোরেট ও কমার্শিয়াল বিজনেস কিছু কৌশলগত বিষয় বিবেচনায় নিয়ে লোন প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।
•ফান্ডিং বেস যথার্থভাবে ব্যবহারের সচেতন সিদ্ধান্তে ডিসেম্বর, ২০২০ এর তুলনায় আমানত ৪ শতাংশ কমে গেছে। কারেন্ট অ্যাকাউন্ট সেভিং অ্যাকাউন্ট (কাসা) মিক্স তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ৫৯ শতাংশে উন্নিত হয়েছে, যা ডিসেম্বর, ২০২০ এ ছিল ৫৩ শতাংশ।
•নন-ফান্ডেড বিজনেস লক্ষ্যণীয় প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। একসেপ্টেন্স ৫০ শতাংশ, এলসি ইসুয়েন্স ৭০ শতাংশ ও বিল কালেকশন ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
•২০২০ সালের এপ্রিলে থেকে ঋণের ইন্টারেস্ট রেট ৯ শতাংশে বেঁধে দেয়ার ও পরবর্তীতে আমানতের উপর ইন্টারেস্ট সীমা নির্ধারন করার পর থেকে পুরো ব্যাংকিং খাতের ইন্টারেস্ট মার্জিন কমে যাচ্ছে। তা সত্ত্বেও ব্র্যাক ব্যাংক নেট ইন্টারেস্ট আয়ে ৫৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। আমানতের খরচ কার্যকরভাবে ব্যবস্থাপনার কারণে এটি সম্ভব হয়েছে।
•এ প্রান্তিকে আয় ব্যয়ের অনুপাত উন্নিত হয়ে স্ট্যান্ডঅ্যালনে ৫২ শতাংশ এবং কন্সোলিডেটেড ভিত্তিতে ৬৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে
রিটার্ন অন ইকুইটি (আরওই) ও রিটার্ন অব অ্যাসেট (আরওএ) আরও উন্নত হয়েছে।
স্ট্যান্ডঅ্যালন ভিত্তিতে: রিটার্ন অন ইকুইটি ১২ শতাংশ ও রিটার্ন অব অ্যাসেট ১.৪ শতাংশ। এছাড়া কন্সোলিডেটেড ভিত্তিতে: রিটার্ন অন ইকুইটি ১১ শতাংশ ও রিটার্ন অব অ্যাসেট ১.২ শতাংশ।
•পূর্ববতী বছরের একই সময়ের তুলনায় খেলাপী ঋণের হার (এনপিএল) ০.৪ শতাংশ বেড়ে ৩.৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে এনপিএল কভারেজ ১৫১ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ১৪৫ শতাংশ হয়েছে।
•কন্সোলিডেটেড ভিত্তিতে ক্যাপিটাল এডিকোয়েসি রেসিও (সিএআর) হয়েছে ১৪.২ শতাংশ। যার মধ্যে ৯১ শতাংশ টিয়ার-১ ক্যাপিটাল, যার দেশের ব্যাংকিং খাতে অন্যতম শীর্ষস্থানীয়। স্ট্যান্ডঅ্যালন ভিত্তিতে ক্যাপিটাল এডিকোয়েসি রেসিও হয়েছে ১৪.৬%, যা রেগুলেটরি বাধ্যবাধকতার সীমা ১২.৫% এর থেকে অনেকাংশে বেশি।
•সেপ্টেম্বর, ২০২১ এ কন্সোলিডেটেড ভিত্তিতে শেয়ার প্রতি নেট অ্যাসেট ভ্যালু ৩৫.২ টাকা এবং স্ট্যান্ডঅ্যালন ভিত্তিতে ৩৪.১ টাকা হয়েছে।
এ প্রান্তিকের আর্থিক ফলাফল সম্পর্কে ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম আর. এফ. হোসেন বলেন, “ব্র্যাক ব্যাংক এর প্রধান প্রধান আর্থিক সূচকগুলো ব্যবসা স্বাভাবিকের দিকে ফিরে যাবার ও ব্যবসায় গতি আসতে শুরু করা ইঙ্গিত দিচ্ছে। এ প্রান্তিকে রিটেইল ব্যবসা অগ্রগামী ছিল, যার ফলে আমরা লোন ও অ্যাডভান্সে ৫% প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি। নন-ফান্ডেড আয়, নেট ইন্টারেস্ট আয় ও কাসা মিক্স আরও উন্নত হয়েছে, যা ব্যাংকের ব্যবসার জন্য শুভ বার্তা নিয়ে এসেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আরওই, আরওএ ও সিএআর ব্যাংকের দৃঢ় অবস্থা ও আর্থিক স্থিতিশীলতার প্রমাণ দেয়, যা গ্রাহকদের আস্থা বাড়াবে। ব্যাংকিং খাতে অনেক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বিশ্বখ্যাত ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি - এসএন্ডপি - গত পাঁচ বছর যাবৎ ব্র্যাক ব্যাংক এর ক্রেডিট রেটিং ‘বি+’ বজায় রেখে আসছে। এর মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক পুরো ব্যাংকিং খাতে আলাদা অবস্থান প্রতিষ্ঠা করেছে এবং ব্যাংকের এর প্রকৃত শক্তিমত্তা ও সক্ষমতা বুঝতে পারা যায়।”ৎ
ব্র্যাক ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ব্যাংকের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক বিবরণী পাওয়া যাবে: https://www.bracbank.com/en/investor-relations#financialStatements.