আহতদের মধ্যে ২৭ জনকে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল ও ১৬ জনকে ময়নাগুড়ি সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে বিভাগের উদ্ধারকারী কর্মীরা।
দৈনিক আনন্দবাজার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিহারের রাজধানী পাটনা থেকে আসামের রাজধানী গুয়াহাটির দিকে যাচ্ছিল বিকানের এক্সপ্রেস নামের এই ট্রেনটি। বিকেল ৫ টার দিকে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়িতে কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় দুর্ঘটনায় পড়ে সেটি।
ট্রেনের ৪-৫ টি বগি দুমড়েমুচড়ে গেছে। একটি বগির ওপর উঠে গেছে আর একটি বগি। প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, ট্রেনটির ইঞ্জিনের পর থেকে ১২টি বগি দুর্ঘটনার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে ৭টি বগি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দুর্ঘটনার সময় ট্রেনটির গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার ছিল বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ রেলওয়ে বিভাগ জানিয়েছে, ট্রেনটি ছাড়ার সময় তাতে প্রায় ৭০০ যাত্রী ছিলেন। পরে বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীরা নামা-ওঠা করেন।
আনন্দবাজার বলছে, ট্রেন দুর্ঘটনার স্থানে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। দুর্ঘটনায় ট্রেনের কয়েকটি বগি উল্টে যাওয়ায় অনেকেই চাপা পড়েছেন। উদ্ধারকর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয়রাও ট্রেনের নিচে চাপা পড়া যাত্রীদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। আহতদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ওই এলাকার আশপাশের সব হাসপাতাল এবং অন্যান্য হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করছে কর্তৃপক্ষ।
ভারতের কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এক টুইটবার্তায় জানিয়েছেন, তিনি উদ্ধারকাজের কাজের ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখছেন এবং বৃহস্পতিবার রাতেই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাবেন।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক টুইটবার্তায় এই দুর্ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, রাজ্য সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও রেলওয়ে বিভাগকে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা ও আহতদের হাসপাতালে ভর্তির বিষয়টি তদারক করতে ইতোমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আহতদের সুচিকিৎসার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।
পৃথক এক টুইটবার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘রেলমন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। পশ্চিমবঙ্গে ট্রেন দুর্ঘটনার নিয়ে খোঁজ নিয়েছি। শোকাহত পরিবারের পাশে রয়েছি। আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন, এই কামনা করি।’
দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে ভারতের মূল রেল দফতর রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারপার্সনকে প্রধান করে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রণালয়।
এছাড়া, ইতোমধ্যে হতাহতদের জন্য ক্ষতিপূরণও ঘোষণা করেছে মন্ত্রণালয়। এক প্রতিবেদনে এনডিটিভি জানিয়েছে দুর্ঘটনায় নিহতদের ৫ লাখ, গুরুতর আহতদের ১ লাখ ও আহতদের ২৫ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।