সম্ভাবনাময় এই খাতটি এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু গবাদি পশু নানা রোগে মারা যাওয়ায় ক্ষুদ্র খামারিরা প্রায়শই প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছেন এবং ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছেন। এই খাতের এই সব ঝুঁকির কারণে প্রান্তিক খামারিরা ব্যাংক ঋণ পেতে অসুবিধায় পড়েন।
এই অসুবিধা থেকে খামারিদের মুক্তি দিতে এসএমই খাতের বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক দেশে প্রথমবারের মত বীমা সুবিধাসহ গবাদি পশুর খামারের জন্য একটি বিশেষ ঋণ চালু করে। এই সলিউশনটি খামারিদের দু’টি বড় সমস্যার সমাধান করেছে। এক. সহজে লোন সুবিধা, দুই. গবাদি পশুর মৃত্যু হলেও বীমা সুবিধা।
ব্র্যাক ব্যাংক গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, সুইসকন্টাক্ট, সুইজারল্যান্ডের দূতাবাস, মাইক্রোইন্সুরেন্স মার্কেট ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (বিএমএমডিপি/সুরক্ষা) এর সাথে গ্রামীণ এলাকায় গবাদি পশু খামারিদের জন্য ক্ষুদ্রবীমা সেবা চালু করে। ওই প্রকল্পের আওতায় ৬০০জন খামারি ১,৬০০টি গবাদি পশুর জন্য লোন সুবিধা ও বীমা সুবিধা পাবেন।
ব্র্যাক ব্যাংক এখানেই থেমে থাকেনি। টেকসই পদ্ধতিতে এই ব্যবসা পরিচালনার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খামারিদের জন্য সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। এ ফলে খামারিরা কার্যকর পদ্ধতিতে খামার পরিচালনা করতে পারছেন। ব্যবসা দীর্ঘমেয়াদে সফল হচ্ছে।
এই সম্মেলনে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা (ইউএলও) গবাদি পশুর খাদ্য, রোগ, শেডের নকশা এবং বাণিজ্যিক গবাদি পশু পালনের উদ্যোগ সফলভাবে পরিচালানোর জন্য অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেন। এছাড়াও আর্থিক ব্যবস্থাপনা, সহজে লোন প্রাপ্তি ও বীমা সুবিধা নিয়েও আলোচনা করেন।
চট্টগ্রামের মীরসরাই, লোহাগাড়া, কক্সবাজারের পেকুয়া ও টেকনাফ এবং কুমিল্লার হোমনা, তিতাস, ব্রাহ্মণপাড়া, চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ ও বরুরায় এজেন্ট ব্যাংকিং অফিসে এ সচেতনতামূলক সেশন আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ব্যাংক এর হেড অব এগ্রিকালচারাল ফাইন্যান্স এস এম সাইফুল ইসলাম, গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের এভিপি মারুফ হোসেন এবং সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এই উদ্যোগ সম্পর্কে ব্র্যাক ব্যাংক এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব এসএমই ব্যাংকিং সৈয়দ আব্দুল মোমেন বলেন, “সূচনা লগ্ন থেকেই ব্র্যাক ব্যাংক পিছিয়ে পড়া ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠির আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং দরিদ্র বান্ধব প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে এসএমই অর্থায়নের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই বীমা কভারেজ দেশের গবাদি পশু পালন খাতকে আরও সামনে এগিয়ে নিবে এবং আরও বেশি উদ্যোক্তাকে বাণিজ্যিকভাবে পশু পালনে উৎসাহিত করবে। এটি বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চলে দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে, কেননা এতে খামারিদের স্বার্থ রক্ষা হবে। খামারিদের আরও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে এবং ব্যবসাকে দীর্ঘমেয়াদে টেকসই করতে আমরা এই ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবো।”