তামহা সিকিউরিটিজের ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারীদের অর্থ ফেরতের দাবি

তামহা সিকিউরিটিজের ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারীদের অর্থ ফেরতের দাবি
গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) তামহা সিকিউরিটিজের লেনদেন স্থগিত করে। শেয়ার লেনদেন ও ডিপোজিটরি পার্টিসিপেন্ট (ডিপি) স্থগিত হওয়া তামহা সিকিউরিটিজের ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারীরা অর্থ ফেরতের দাবি জানিয়েছেন।

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।

বিনিয়োগকারীরা বলেন, সম্প্রতি তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেড সদস্য নং ৮১ মালিক কর্তৃক বিনিয়োগকারীদের সব শেয়ার ডুপ্লিকেট সফটওয়্যার ব্যবহার করে জালিয়াতি করে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি করে দেয়। পরে ২০২১ সালের ২৯ নভেম্বর হাউজটির ট্রেড স্থগিত করে দেয় বিএসইসি। এরপর আমরা সিডিবিএল এ যোগাযোগ করে জানতে পারি আমাদের বিও হিসেবে কোন শেয়ার নেই। এমনকি আমাদের দুই শতাধিক বিনিয়োগকারীদের মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন করে তামহা সিকিউরিটিজ। যাতে বিনিয়োগকারীরা তাদের এই জালিয়াতি জানতে না পারে। তারা যে ডুপ্লিকেট সফটওয়্যার ব্যবহার করত সেটা আমাদেরকে ক্রয়- বিক্রয়ের এসএমএস ও মেইলে প্রতিদিনের বাজারের আপটেড দিতো। এ কারণে আমরা তাদের জালিয়াতি বুঝতে পারিনি। সিকিউরিটিজ হাউজটির মালিকসহ তার দুই ভাই বোন প্রায় শত কোটি টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায়। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন বিনিয়োগকারীদের আবেদন ছাড়া সিডিবিএল এ মোবাইল নাম্বার কিভাবে পরিবর্তন করল।

এসময় বিনিয়োগকারীরা আরও বলেন, ডিএসইর মনিটরিং এর অভাবে আজ আমরা সবকিছু হারিয়ে পথে বসে গেছি। নিয়ন্ত্রক সংস্থা যদি ঠিক মতো মনিটরিং করতো তাহলে এধরনের জালিয়াতি ঘটতো না বলে আমরা মনে করি। কারণ এই জালিয়াতি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে তামহা সিকিউরিটিজ।

সংবাদ সম্মেলনে বিনিয়োগকারীরা বিএসইসি চেয়ারম্যনের কাছে তাদের বিনিয়োগের টাকা ফেরত দেয়ার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়ে বলেন, আমরা ধারনা করছি তামহা সিকিউরিটিজের মালিক ডাঃ হারুন বিনিয়োগকারীদের এই অর্থ আত্মসাত করেছেন। তাই যতদ্রুত সম্ভব তাকে বিচারের আওতায় এনে আমাদের টাকা/ শেয়ার ফেরতের উদ্যোগ নিন। আমরা প্রায় দুই শতাধিক ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী আজ তিন মাস ধরে পথে পথে ঘুরেছি। কখনো বিএসইসি আবার কখনো ডিএসইতে । কেউ আমাদের লোপাট করা টাকা/ শেয়ার ফেরতের আশ্বাস দিচ্ছেন না। সবকিছু হারিয়ে আমরা এই করোনায় অসহায় হয়ে পড়েছি। এমনকি নতুন বছরে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়াও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

এসময় তামহা সিকিউরিটিজে ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাবুল, নজরুল ইসলাম, মজিবুর রহমান, আবু তাহের, মো. ফকরুল ইসলাম, রওশনারা হোসেন, সোহরাব হোসেন, সোহেল সাহেব, রুহুল হোসেন, শাজাহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে তামহা সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হারুনুর রশিদসহ প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুরোধের পর গত ৫ জানুয়ারি সংস্থাটি এ সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় দুই হাজার বিও হিসাব ছিল। আর মালিকানায় ছিলেন ডেল্টা হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের ডাক্তার মো. হারুনুর রশীদ। তিনিই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তামহা সিকিউরিটিজের মাধ্যমে গত দেড় বছরের বেশি সময়ে তিনটি ব্রোকারেজ হাউসের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে। তার মধ্যে ২০২০ সালের জুনে ২০ কোটি টাকা আত্মসাতে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ ও ২০২১ সালের জুনে ৬৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বানকো সিকিউরিটিজের লেনদেন স্থগিত করে ডিএসই।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত