এসব কারণে মাছ কোম্পানিগুলো আপাতত চাষিদের কাছ থেকে মাছ কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। কিছু কারখানা শ্রমিকদের ছুটি দিয়েছে।
শুধু বাগেরহাটের মোংলা ও রামপাল উপজেলার ৫ লাখের বেশি মানুষ তাঁদের ৯০ ভাগ জমিতেই বাগদা চিংড়ি চাষ করে থাকেন। তাঁরা সরকারের কাছে দ্রুত সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন।
মোংলা ও রামপাল উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, লোনাপানি-অধ্যুষিত মোংলা ও রামপালে প্রায় তিন যুগ আগে থেকে ধানের পরিবর্তে বছরের প্রায় আট মাসই বাগদা চিংড়ি চাষ হয়ে আসছে। মোংলার ১২ হাজার ৫০০ হেক্টর কৃষিজমির মধ্যে ১০ হাজার ৮৫৮ হেক্টর জমিতেই বাগদা চিংড়ি চাষ করা হয়। আর এ পরিমাণ জমির মধ্যে ছোট-বড় মিলিয়ে ঘেরের সংখ্যা ৫ হাজার ৫৫০।
রামপালের ১৪ হাজার ৮৮১ হেক্টর জমিতে বাগদা চিংড়ির চাষ হয়। এর মধ্যে ছোট-বড় মিলিয়ে বাগদা চিংড়ির ঘেরের সংখ্যা ৪ হাজার ৮৬৫। ধান বা অন্য কোনো ফসল না হওয়ায় এ দুই উপজেলার অধিকাংশ মানুষই চিংড়ি চাষের ওপর নির্ভরশীল।
বাংলাদেশ হিমায়িত খাদ্য রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী বেলায়েত হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, দেশে ১০৫টি হিমায়িত মৎস্য প্রক্রিয়াজাত কারখানা লাইসেন্সপ্রাপ্ত হলেও মাত্র ৩০-৩৫টি কারখানা রপ্তানিতে সক্রিয়। ইতিমধ্যে এসব কারখানায় ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশ ২৯০টি চিংড়ির ক্রয়াদেশ বন্ধ এবং বাতিল করে দিয়েছে, যার আর্থিক মূল্য ৪৬০ কোটি টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন কারখানায় প্রায় এক হাজার কোটি টাকার অবিক্রীত চিংড়ি মজুত আছে। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তা-ও অনিশ্চিত। ভয়াবহ দুঃসময় চলছে এ শিল্পের। ইতিমধ্যে কিছু কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। এখানে নিয়োজিত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৬০ লাখের বেশি লোকের জীবিকা নিশ্চিতকরণের জন্য রপ্তানি কার্যক্রম চালু রাখার বিকল্প নেই। তাই চিংড়িশিল্প রক্ষায় সরকারকে দ্রুত চাষি ও কারখানামালিকদের পাশে দাঁড়াতে হবে।