অবশেষে পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের জন্য এ প্রণোদনা বহাল রেখে নতুন করে আদেশ জারি করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এখন প্রণোদনাটি আগামী ৪ মে পর্যন্ত পাবেন শুধু পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, গতকাল সোমবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে বন্দর কর্তৃপক্ষ পোশাক শিল্প মালিকদের মাশুল ছাড়ের সুবিধা দিয়ে নতুন একটি আদেশ জারি করে। এটি পাবেন শুধু বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সদস্যরা। ফলে চট্টগ্রাম বন্দর চত্বরে আমদানি করা কনটেইনার রাখার ভাড়া তাদের দিতে হবে না। যেখানে প্রণোদনাটি আগে সবার জন্য প্রযোজ্য ছিল।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের পর্ষদ সদস্য মো. জাফর আলম বলেন, পোশাক কারখানা মালিকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে স্টোর রেন্ট মওকুফ সুবিধাটি দেয়া হয়েছে । পণ্য আমদানির পর আমদানিকারকেরা দ্রুত তা ছাড়করণের উদ্যোগ নেবেন এটা আমাদের প্রত্যাশা। এছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে কাস্টমসসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোও আরো বেশি দায়িত্ব নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করলে বন্দরের পরিচালন ও খালাস কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৬ মার্চ সাধারণ ছুটির সময় থেকে বন্দর দিয়ে আমদানি করা সব ধরনের কনটেইনার রাখার ভাড়ায় ছাড় দেয়া হয়েছিল। সাধারণ ছুটির কারণে বেশিরভাগ সংস্থার সেবার আওতা সীমিত করায় এই ছাড় দেয়া হয়। কিন্তু এ সুবিধা নিয়ে উল্টো বন্দরে কনটেইনার ফেলে রেখে জট বাড়িয়ে দিলে গত ২০ এপ্রিল থেকে তা প্রত্যাহার করে নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। এখন বিজিএমইএর অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এই সুবিধা তাদের দেয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, সবমিলিয়ে বন্দরে পড়ে থাকা প্রায় ১৩ হাজার কনটেইনারের ক্ষেত্রে এ ছাড় পবেন পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা। যেখানে বন্দর চত্বরে থাকা কনটেইনারের ৩৯ শতাংশই বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর আওতাধীন পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের আমদানি করা কাঁচামাল। এর বাইরে শিল্প কারখানার (ইন্ডাস্ট্রিয়াল) রয়েছে ২৫ শতাংশ । বাণিজ্যিকভাবে (কমার্শিয়াল) আমদানি হওয়া পণ্য রয়েছে ৩২ শতাংশ এবং বাকি ৪ শতাংশ হিমায়িত পণ্যের কনটেইনার ।
স্বাভাবিক সময়ে জাহাজ থেকে নামানোর পর বন্দরে চারদিন পর্যন্ত বিনাভাড়ায় কনটেইনার রাখা যায়। এরপর প্রথম ধাপে প্রতিটি কনটেইনারে ছয় ডলার, দ্বিতীয় ধাপে ১২ ডলার এবং শেষধাপে ২৪ ডলার করে ভাড়া দিতে হয়।
তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবদুস সালাম এ প্রসঙ্গে বলেন, জাতীয় রফতানির বৃহত্তর স্বার্থে তৈরি পোশাক শিল্পের আমদানি হওয়া পণ্যের চালান খালাসে সুবিধা দিতে অনুরোধ করা হয়েছিল। প্রথমদিকে যখন মাশুল মওকুফের সুবিধা দিয়েছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ তখন সার্বিকভাবে অনেক ধরনের প্রতিবন্ধকতাও ছিল। প্রাইভেট আইসিডি (অফডক) থেকেও খালাসে মাশুল কমিয়ে সহনীয় পর্য়ায়ে নির্ধারণ করতে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।