সমাজের পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর মেধাবী সন্তানদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে ব্র্যাক ব্যাংক। সাম্প্রতিক কয়েকটি নিয়োগ পরীক্ষায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক চাকরীপ্রার্থী অসাধারণ মেধার স্বাক্ষর রেখে এই ব্যাংকে চাকরীর সুযোগ পেয়েছেন।
চাকরীপ্রার্থীদের অধিকাংশই অত্যন্ত পরিশ্রম করে লেখাপড়া করেছেন। ছিল দু’বেলা দু’মুঠো খাবারের কষ্ট, বাসস্থানের কষ্ট, ছিল কাপড়ের কষ্ট। বেঁচে থাকা ছিল সংগ্রামের। পরিবারের লেখাপড়ার খরচ বহনের ক্ষমতা না থাকায় অনেকে চাচা-মামার আশ্রয়ে বড় হয়েছেন, অনেকে ইটভাটার মতো জায়গায় কায়িক পরিশ্রমের উপার্জনের টাকায় পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন।
মেধাবী এই ছেলেমেয়েরা কৃষক, কাঠুরে, মুদি দোকানদার, সবজি বিক্রেতা, দিনমজুর পরিবার থেকে শুধুমাত্র মেধা, অদম্য মানোবল ও অধ্যবসায়ের উপর ভর করে উঠে এসেছেন। ব্র্যাক ব্যাংক এর চাকরী পেয়ে এখন তাঁরা উজ্জ্বল আগামীর স্বপ্ন দেখছেন।
তাদের সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে জীবন সংগ্রামের চিত্র, সাহসিকতার গল্প, হার-না-মানা মানসিকতার গল্প। করোনা তাদের জীবন থেকে দুই বছর কেড়ে নিয়েছে। মহামারির কারণে বেশিরভাগ সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চাকুরীর বিজ্ঞাপন দেয়নি। কোন নিয়োগ হয়নি। ২০১৮-২০১৯ সালে যারা পাশ করেছে তারা তাদের জীবন থেকে দুই বছর হারিয়েছেন।
তাদের মতে, সম্প্রতি অনেক প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞাপন দিচ্ছে ও নিয়োগ দিচ্ছে। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যারা পাশ করেছেন, তারা অনেক সময় ইন্টারভিউয়ের সুযোগ পান না।
সাম্প্রতিক সময়ে ব্র্যাক ব্যাংক এর চাকুরীর পরীক্ষায় জেলা ও বিভাগীয় শহরের কলেজ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনের গ্র্যাজুয়েটরা প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা বাংলাদেশের কর্পোরেট সেক্টরে কাজের সুযোগ চান। সুযোগ পেলে তারা তাদের মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে প্রতিষ্ঠানের অগ্রগতিতে অবদান রাখবেন।
ব্যাংকের চ্যালেঞ্জিং কাজ করতে পারবেন কিনা এ প্রশ্নের উত্তরে একজন প্রার্থী বলেন, খোলা আকাশের নিচে সূর্যের তাপে ইট বানানোর চেয়ে ব্যাংকের কাজ আর কতই বা কষ্টের হবে? একজন প্রার্থী টাই পরে না আসতে পারায় নার্ভাস ছিলেন। নিজেই বলেছেন যে তার কোন টাই নেই। কিন্তু সাক্ষাৎকারে তার জ্ঞানের গভীরতার স্বাক্ষর তিনি রাখতে পেরেছেন। অনেক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই ছেলেমেয়েদের অদম্য মনোবল, কর্মস্পৃহা ও যেকোন বাধা পেড়িয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার মানসিকতা সাক্ষাৎকার-গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের আন্দোলিত করেছে, তাদের মাঝে সম্ভাবনা খুঁজে পেয়েছেন। চাকুরীতে নির্বাচনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র মেধার মাপকাঠিতেই তাদেরকে পরিমাপ করা হয়েছে।
ব্র্যাক ব্যাংক মানুষের জীবন বদলাতে সাহায্য করে। পিছিয়ে পড়া মানুষদের সামনে এগিয়ে আসতে পাশে দাঁড়ায়। যাতে সমাজের কেউ পিছিয়ে না থাকে। প্রান্তিক উদ্যোক্তাদের যেমন এসএমই ঋণ প্রদান করে, তেমনি প্রান্তিক ছেলেমেয়েদের চাকুরী প্রদান করে সম্ভাবনা ও সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের সুযোগ করে দেয়। দেশ ও দেশের মানুষের সমৃদ্ধির পথচলায় গত দুই দশক ধরে নিরন্তর পাশে আছে ব্র্যাক ব্যাংক।
জানা গেছে, আগামী চার বছরে ব্যবসা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। এ সম্প্রসারণ পরিকল্পনাকে এগিয়ে নিতে মানবসম্পদে বড় ধরনের বিনিয়োগ করছে ব্যাংকটি। দেশব্যাপী বিস্তৃতি ও ব্যবসায়িক পরিধি বাড়াতে ব্র্যাক ব্যাংক ২০২২ সালে দুই হাজার নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ করবে। ইয়ং লিডারস প্রোগামের আওতায় একবারে রেকর্ড ৮০ জন সদ্য পাশ করা গ্র্যাজুয়েট নিয়োগসহ এ বছর ইতোমধ্যেই ২০০ এর বেশি কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে।
এই নতুন নিয়োগের এ ঘোষণাটি দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও উৎসাহ সৃষ্টি করেছে। ব্র্যাক ব্যাংক এ অফিসার থেকে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার গ্রেডের কর্মকর্তাদের বেতন একবারে ৫০% পর্যন্ত বৃদ্ধির সাম্প্রতিক উদ্যোগও চাকুরীপ্রার্থীদের মধ্যে উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।
৭,৮০০ জন ফুল-টাইম কর্মকর্তা নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের অন্যতম শীর্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিভাময় কর্মকর্তাদের অন্যতম নিয়োগদাতা। সুযোগ-সুবিধা, কাজের পরিবেশ, নিয়মানুবর্তিতা, স্বচ্ছতা, ব্র্যান্ড ভ্যালু ও কর্পোরেট সুশাসনের কারণে চাকুরীদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশের তরুণ সম্প্রদায়ের প্রথম পছন্দ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে লুকিয়ে থাকা এই মেধাবীদের সুযোগ দিয়ে তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত বিনির্মাণে সবসময় পাশে থাকবে ব্র্যাক ব্যাংক।