আর এ কারণে মিলগুলো ধুঁকে ধুঁকেই চলতে থাকে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এক মাস পাটকল বন্ধ থাকার পর চালু করা হলে মিলগুলোতে মজুদ পাট সংকটের চিত্র ফুটে ওঠে।
এর মধ্যে খুলনার স্টার ও প্লাটিনাম জুট মিলে পাটের সংকট প্রকট। এখানে পাট সংগ্রহ করেই প্রতিদিনের উৎপাদন চালু রাখা হচ্ছে। আর অন্যান্য পাটকলে এক মাস উৎপাদন চালিয়ে রাখার মতো পাট মজুদ রয়েছে।
বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) খুলনা অঞ্চলের লিয়াজোঁ কর্মকর্তা বনিজ উদ্দিন মিঞা বলেন, করোনায় বন্ধ থাকার কারণে মিলগুলো যথাযথভাবে পাট কিনতে পারেনি। এ কারণে এখন মিলগুলো চালু হলেও প্রয়োজনীয় উৎপাদন করতে পারছে না। কাঁচা পাট সংকটের কারণে বর্তমানে মিলগুলোতে উৎপাদন এক-তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে।
বিজেএমসি সূত্র জানায়, খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকলে প্রতিদিন পাটজাত পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৭২ দশমিক ১৭ টন। সেখানে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৮০ টন। এর মধ্যে দৈনিক কার্পেটিং জুট মিলের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৬৮ টন, ক্রিসেন্ট জুট মিলের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৭০ দশমিক ৫০ টন, দৌলতপুর জুট মিলের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১০ দশমিক ১১ টন, ইস্টার্ন জুট মিলের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১৬ দশমিক ৩৪ টন, যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজে (জেজেআই) উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২২ দশমিক ২০ টন, খালিশপুর জুট মিলের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৪৭ দশমিক ৫০ টন, প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৫০ দশমিক ৫৪ টন, স্টার জুট মিলের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩৬ দশমিক ৮০ টন, আলীম জুট মিলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১০ দশমিক ৫০ টন।
সময়মতো প্রয়োজনীয় কাঁচা পাট কিনতে না পারার কারণে মিলগুলোর উৎপাদনে সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারাও। প্লাটিনাম জুট মিলের সিবিএ সভাপতি শাহানা শারমিন বলেন, পাটকলগুলো আর্থিক সংকটে থাকায় শ্রমিকরা কাজ করেও নিয়মিত মজুরি পাচ্ছেন না। আর এ কারণেই আন্দোলন করতে হয়েছে। শ্রমিকরা কেবল মজুরি নিয়েই আন্দোলন করেন না। পাট খাতে অর্থ বরাদ্দ নিয়েও আন্দোলন করেন। কিন্তু সুফল মিলছে না।
আর ক্রিসেন্ট জুট মিলের সিবিএ নেতা মো. মুরাদ হোসেন বলেন, এ মুহূর্তে ঝুঁকি সত্ত্বেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিকরা মিলের উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় কাঁচা পাটের জোগান ঠিক রাখাটা জরুরি।
প্লাটিনাম জুট মিলের প্রকল্প প্রধান মো. গোলাম রব্বানী বলেন, শ্রমিকরা কাজে যোগদানের সঙ্গে সঙ্গেই কাঁচা পাট ক্রয়ের বিষয়টি চিন্তায় নিতে হয়েছে। কারণ কাঁচা পাট না থাকলে শ্রমিকরা কাজ করতে পারবেন না। মিলে সপ্তাহখানেকের পাট মজুদ আছে। তাই কাঁচা পাট কেনার ওপর জোর দিতে হচ্ছে।