করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর আগে থেকেই ধুঁকছিল অর্থনীতি। কোভিড-১৯ গোটা বিশ্বের সঙ্গে ভারতের অর্থনীতিও কার্যত পঙ্গু করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার প্রায় ৩৩ মিনিটের প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের মূল সারবত্তা ছিল এই আর্থিক প্যাকেজই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘টোয়েন্টি টোয়েন্টিতে ২০ লক্ষ কোটির প্যাকেজ। এই আর্থিক প্যাকেজের মধ্যে কৃষক, শ্রমিক থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র শিল্পক্ষেত্র— যাঁরা নিয়ম মেনে কর দেন, শিল্পক্ষেত্র সবার জন্য বন্দোবস্ত থাকবে।’’ প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামিকাল থেকে ধাপে ধাপে এই প্যাকেজের বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
এই আর্থিক প্যাকেজে ভারতের অর্থনীতিতে এক বিরাট সংস্কার নিয়ে আনবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘এই প্যাকেজের মাধ্যমে চেষ্টা করা হবে যাতে কৃষিক্ষেত্রে সবচেয়ে কম ক্ষতি হয়। আর্থিক ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে মানবসম্পদের উন্নয়ন করতে হবে। এ ছাড়া মেক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্পে এই প্যাকেজ আরও উৎসাহ বাড়াবে।’’ শ্রমিকশ্রেণির কথা বলতে গিয়ে মোদী বলেন, ‘‘শ্রমিক, মজুর-সহ নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ এই করোনা সঙ্কটে অনেক কষ্ট করেছেন, অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। এ বার সময় এসেছে, আমাদের তাঁদের জন্য কিছু করার। সেই কথা মাথায় রেখেই গরিব, শ্রমিক, মৎস্যজীবী— সংগঠিত হোক বা অসংগঠিত ক্ষেত্র, সবার কথা ভেবেই এই আর্থিক প্যাকেজ তৈরি হয়েছে।’’
১৭ মে শেষ হচ্ছে তৃতীয় দফার লকডাউন। তার পরেও কি লকডাউ থাকবে? থাকলেও কতটা নিয়ন্ত্রণ বা কোন কোন ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে, তা নিয়ে দেশবাসীর কৌতূহল ছিল। লকডাউনের চরিত্র কেমন হবে, তা স্পষ্ট না করলেও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘লকডাউন-৪ সম্পূর্ণ অন্য রকমের হবে।’’ প্রধানমন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট চতুর্থ দফায় লকডাউন বাড়ছে। তবে নিয়ন্ত্রণ বা শিথিলতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়নি। সেটা ১৮ তারিখের আগেই জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল সোমবারই মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ১৫ তারিখের মধ্যে রাজ্যগুলির পরামর্শ চেয়েছেন। রাজ্যগুলির কাছ থেকে সেই সংক্রান্ত অনেক পরামর্শ পাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।