রোববার (১০ জুলাই) বঙ্গভবন থেকে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দেওয়া এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান। এর আগে বঙ্গভবনের দরবার হলে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, বিগত দুই বছরের করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই নতুন করে এখন যুক্ত হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট। যুদ্ধ আর সংঘাতের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি চাপের মুখে পড়েছে, বেড়েছে মূল্যস্ফীতি। সরকার এ পরিস্থিতি মোকাবিলার সঙ্গে সঙ্গে সার্বিক অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বিভিন্ন প্যাকেজ প্রণোদনা প্রদানসহ বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। কৃষি ও শিল্পসহ উৎপাদনশীল প্রতিটি খাতের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতেও সরকার সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা মোকাবিলায় বন্যাদুর্গত, অসচ্ছল ও নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবেও সরকারের বিভিন্ন সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়েও উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
কেউ যাতে ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্য দেশের বিত্তবান ও সচ্ছল ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপ্রধান।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের কথা তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, ‘এবার ঈদের আগেই দেশবাসীর কাছে মহাখুশির উপলক্ষ হয়ে এসেছে গৌরবের নিদর্শন পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন। এর মাধ্যমে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার তিন কোটি মানুষের বহুমুখী যোগাযোগের অপার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আগামী বছর সেতুতে রেল সংযোগ স্থাপিত হলে দেশের সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক নতুন মাত্রা যোগ হবে। পদ্মা সেতুর ফলে দেশের অর্থনীতিতে যে ইতিবাচক অগ্রগতির সুযোগ সৃষ্টি হলো তা সমগ্র দেশবাসীর জন্যই বিশেষ আনন্দের বিষয়।’
দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সব সংকট মোকাবিলা করে নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যাবে আমাদের দেশ— এ প্রত্যাশা সবার। কিন্তু এজন্য দরকার সবার সম্মিলিত প্রয়াস। বিশেষ করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, সঠিকভাবে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। পবিত্র ঈদুল আজহার মর্মার্থ অনুধাবন করে সমাজে শান্তি ও কল্যাণের পথ রচনা করতে আমাদের সংযম ও ত্যাগের মানসিকতায় উজ্জীবিত হতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি আশা করি, আপনারা সবাই সরকার নির্ধারিত স্থানে কোরবানি সম্পন্ন করবেন এবং যথাসময়ে কোরবানির বর্জ্য অপসারণে সচেষ্ট থাকবেন। ঈদুল আজহা আমাদের জন্য বয়ে আনুক কল্যাণ, সবার মধ্যে জেগে উঠুক ত্যাগের আদর্শ।