দেশের অর্থনীতিতে পুনরায় চাঙা করার ওপর জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘করোনার ওষুধ বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গে সুলভ মূল্যে সমতার ভিত্তিতে সবাই যেন অধিকার পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে।’ মহামারি মোকাবিলা করার জন্য নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর যতটুকু সহযোগিতা প্রয়োজন সেটি দেওয়া উচিৎ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার জন্য আমাদের ডিজিটাল স্বাস্থ্য সমাধান তৈরি করতে হবে।’সবার জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য এই গোটা প্রক্রিয়ায় আমরা যেন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে আমাদের প্রতিশ্রুতি ভুলে না যাই সেটা মনে রাখতে হবে বলেও জানান তিনি। বাংলাদেশের গোটা সরকারি ব্যবস্থা মহামারি মোকাবিলায় কাজ করছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কৌশল অনুযায়ী আমরা কোভিড-১৯ জাতীয় প্রস্তুতি ও রেসপন্স পরিকল্পনা তৈরি করেছি।’
মন্ত্রীর বক্তব্যের পরে জেনেভাতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি শামীম আহসান বলেন, ‘মহামারি রোধে করতে হলে অসমতার যে পার্থক্য সেটি না যেন বেড়ে না যায় সেটি গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রতিটি সমাজেই অসমতা আছে এবং এটিকে বাড়িয়ে দেয় এমন কোনও কিছু আমরা চাই না।’
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ কাজ করছে এবং অনেকের থেকে ভালো করছে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এসডিজির যে লক্ষ্য ৩ (গোল ৩) বিশেষ করে ৩.৮ লক্ষ্যটি—যেখানে ইউনির্ভাসাল হেলথ কভারেজ বিষয়টি বলা আছে সেটি যেন ব্যাহত না হয়, সেজন্য সব পদক্ষেপ নেওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ চায় নতুন ওষুধ যেন বিশ্বব্যাপী পাবলিক গুডস হিসাবে ব্যবহার হয় এবং এটি যেন সুলভ মূল্যে ও সমতার ভিত্তিতে বণ্টন হয়। ওষুধের দাম যদি বেশি হয় তবে একটি বড় জনসংখ্যা এর আওতার বাইরে চলে যাবে। সেজন্য আমরা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য সুলভ মূল্য ওষুধের অধিকারের বিষয়ে অত্যন্ত জোর দিয়েছি।’
কোভিড-১৯ রেজুলেশন
প্রায় এক মাস দর কষাকষির পরে কোভিড-১৯ রেজুলেশনের একটি খসড়া নিয়ে সব সদস্য রাষ্ট্র একমত হয়েছে এবং বাংলাদেশ রেজুলেশনটি কো-স্পনসর করছে। এ বিষয়ে শামীম আহসান বলেন, ‘রেজুলেশনটি বাস্তবায়ন করতে গেলে বড় ধরনের সমন্বয়ের প্রয়োজন আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব অফিস আছে দিল্লিতে। এটি বাস্তবায়নের জন্য তাদের সহায়তার দরকার হবে। এরপরও বাস্তবায়নের জন্য যে সম্পদ প্রয়োজন সেটির চ্যালেঞ্জ থাকবে এবং এটি অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই। তবে আমি আশাবাদী।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় বিভক্তি
যেকোনও বড় ধরনের বহুপাক্ষিক সংস্থায় বিভক্ত মতামতের চ্যালেঞ্জ থাকবে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘যদি মতানৈক্য থাকে তবে সংস্থার আওতাধীন যেকোনো কার্যক্রমের বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে।’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কার্যক্রম চালানোর জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তা জোগাড় করতে সংস্থাটি সমস্যায় আছে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এ ঘটনা গত ১০ বছর ধরে চলছে। এর ৮০ শতাংশের বেশি খরচ আসে স্বপ্রণোদিত অনুদান থেকে। সদস্য রাষ্ট্রগুলো যে অর্থ দেয় সেটি দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার খরচ মেটাতে পারেনা।’
এই গুরুত্বপূর্ণ রেজুলেশনটি বাস্তবায়ন করতে হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তা দরকার জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে আন্তঃরাষ্ট্রীয় মতানৈক্যের কারণে যদি চ্যালেঞ্জ আসে তবে কিছুটা আশংকার কথা থেকে যায়। তবে কোনও সংস্থাই ১০০ শতাংশও ঠিকমতো চলে না এবং এধরনের চাপের মুখে পড়লে সংশোধন করার চেষ্টাটা অব্যাহত থাকে।’