এবিষয়ে জানতে চাইলে নগদ লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক অর্থসংবাদকে বলেন, নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ডে অনুমোদন পেয়েছে বলে সাংবাদিকদের মাধ্যমেই আমরা খবর পেলাম। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছুই জানি না। আমাদের পরিকল্পনা অনুসারে চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি স্বতন্ত্র আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হবে। তবে ডাক বিভাগের সঙ্গে মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান নগদ লিমিটেডের বিদ্যমান সম্পর্ক অপরিবর্তিত থাকবে। অর্থাৎ নগদ লিমিটেড ডাক বিভাগের সেবা হিসেবেই পরিচালিত হবে। সেক্ষেত্রে নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি অন্য আর দশটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হবে।
তিনি আরও বলেন, একটি মোবাইল আর্থিক সেবা হিসেবে নগদ লিমিটেড এখন অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করে। এক্ষেত্রে নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি এবং নগদ লিমিটেডের সম্পর্কও একই রকম হবে। তখন নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি বিভিন্ন প্রডাক্ট নগদ লিমিটেডের মাধ্যমে বিপনন করা হবে। ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভূক্তির বাইরে থাকা প্রান্তিক মানুষকে সেবার কলেরবরের মধ্যে আনতে ফাইন্যান্স পিএলসি এবং নগদ লিমিটড যৌথভাবে কাজ করতে পারবে। তাতে সেবার খরচও কমবে এবং সেবার গুণগত মানও আগের চেয়ে ভালো হবে।
জানা যায়, বোর্ড সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের পরিচালকরা।
নিয়ম অনুযায়ী, দেশে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান (সাবসিডিয়ারি) হতে হয়। কিন্তু নগদ এতদিন কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাবসিডিয়ারি ছিল না। তাই তারা এতদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লাইসেন্স পায়নি। মোবাইলে সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে ডাক বিভাগের প্রতিষ্ঠান হিসেবে। এখন আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনুমোদন পেল নগদ। এখন থেকে প্রতিষ্ঠানটি সারাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা হিসাবে পরিচালনা করতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, নগদ ছাড়াও বিকাশ রকেটসহ ১৩টি প্রতিষ্ঠান এমএফএস কার্যক্রম চালাচ্ছে। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে হিসাব সংখ্যা ১৭ কোটি ৮৬ লাখ ৩৯ হাজার ৬৪২টি। এজেন্ট সংখ্যা ১৫ লাখ ১৫ হাজার ৬৬৫টি।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত ফেব্রুয়ারিতে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বিধিমালা ২০২২– জারি করে। ওই বিধিমালা অনুযায়ী, ব্যাংকের পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানও এখন থেকে এমএফএস দিতে পারবে। এসব প্রতিষ্ঠানের সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে এমএফএস লাইসেন্স দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগে শুধু ব্যাংক ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানের এই সেবা দেওয়ার সুযোগ ছিল। সেই সুবিধার আওতায় নগদ ফাইন্যান্স পিএলসিকে লাইসেন্সের জন্য প্রাথমিক অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধিমালা অনুযায়ী, যারা এমএফএস সেবা দেবে, তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গঠন করতে হবে। সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ৫১ শতাংশ শেয়ার থাকতে হবে মূল ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সরকারি সংস্থার হাতে। এ সহযোগী প্রতিষ্ঠানের পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে ৪৫ কোটি টাকা।