এদিকে ধরলার পানি বৃদ্ধিতে নদী তীরবর্তী লোকজনের মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকের ফসলি জমি ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পানি পরিমাপক) গেজ পাঠক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢল ও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে শুক্রবার ভোর সকাল থেকে (২৬ জুন) দেশের বৃহত্তম সেচপ্রকল্প লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটর। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটর) বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিকাল ৩টায় একই পয়েন্টে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। যা ৫২ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার।
তিনি আরও বলেন, এর আগে গত শুক্রবার (১৯ জুন) রাতে হঠাৎ বাড়তে থাকে তিস্তার পানি প্রবাহ। যা ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে শনিবার সকাল ৬টার দিকে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে শুকিয়ে যাওয়া মৃত প্রায় তিস্তা এখন ফুলে ফেঁপে উঠেছে।
অপরদিকে, পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় তিস্তার তীরবর্তী জেলার পাঁচটি উপজেলার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
তিস্তায় পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় সৃষ্ট বন্যায় চরাঞ্চলের সবজি, বাদাম ও ভুট্টাসহ ফসল তলিয়ে গেছে। তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দি পরিবারগুলো শিশু, বৃদ্ধ ও গবাদি পশু-পাখি নিয়ে পড়েছেন বিপাকে।
দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, তিস্তা নদীর বুকে পলি ও বালু পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। এ কারণে অল্প পানিতেই বন্যার সৃষ্টি হয়। এবারও তাই হয়েছে। এখন তেমন কোনও সমস্যা নেই। সবগুলো গেট খুলে দিয়ে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।