গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ২৯ ডিসেম্বর এই ভাইরাসে সেখানকার নাগরিকদের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য প্রথমবারের মতো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে জানায় চীনা কর্তৃপক্ষ। ওই সময়ে ডব্লিউএইচও’র আশঙ্কা ছিল নতুন ভাইরাসের সংক্রমণ সার্স ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মতো হতে পারে। ২০০২ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ওই সার্স ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ৭৭৪ জনের মৃত্যু হয়।
তবে নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর ছয় মাসের মধ্যে বিশ্ব জুড়ে মৃতের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। আর আক্রান্ত পার হয়েছে এক কোটি। আর এতেই ভাইরাসটির ভয়াবহতা প্রতিফলিত হয় বলে মনে করেন ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক টেড্রোস আডানোম গেব্রিয়াসিস। তিনি বলেন, ‘নতুন এই ভাইরাস আমাদের পৃথিবী- আমাদের জীবনকে কোন ধরনের বিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দিতে পারে, তা ছয় মাস আগে আমরা কেউ কল্পনাও করতে পারিনি।’
ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে টেড্রোস আডানোম গেব্রিয়াসিস বলেন, ‘বেশিরভাগ মানুষ এখনও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকায় এখনও ভাইরাসটির বিস্তারের যথেষ্ট সুযোগ আছে। আমরা সবাই চাই এর অবসান হোক। আমরা সবাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই। কিন্তু কঠিন সত্য হলো এটা অবসানের কাছাকাছিও পৌঁছায়নি। বিশ্বের কয়েকটি দেশ খানিকটা অগ্রগতি অর্জন করলেও, সত্যিকার অর্থে মহামারির গতি বাড়ছে।’ তিনি বলেন, ‘বলতে খারাপ লাগছে, কিন্তু সত্য হলো সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি এখনও আসেনি।’
ডব্লিউএইচও’র জরুরি কর্মসূচি বিষয়ক প্রধান মাইক রায়ান ওই ব্রিফিংয়ে বলেন, সংক্রমণ রোধে একটি কার্যকর ও নিরাপদ টিকা উদ্ভাবনে অসাধারণ অগ্রগতি অর্জিত হলেও, এখন পর্যন্ত কোনও নিশ্চয়তা নেই যে এই উদ্যোগ সফল হবে। ফলে এই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটি মোকাবিলা করতে সরকারগুলোকে পরীক্ষার বিস্তার ঘটাতে হবে, আক্রান্ত নিশ্চিত হওয়াদের বিচ্ছিন্ন রাখতে হবে আর তাদের সংস্পর্শে আসা মানুষদের চিহ্নিত করতে হবে বলে জানান তিনি। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও জার্মানি ভাইরাসটি মোকাবিলায় বিস্তৃত ও টেকসই কৌশল নিতে পেরেছে বলে ইঙ্গিত দেন মাইক রায়ান।
ব্রিফিংয়ে টেড্রোস আডানোম গেব্রিয়াসিস জানান, ভাইরাসটি প্রতিরোধের উপায় খোঁজার গবেষণার অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে এই সপ্তাহে একটি বৈঠক আয়োজনের পরিকল্পনা করছে ডব্লিউএইচও।