এদিকে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের বিষয়ে গত ২০১৪-১৫ এবং ২০১৮-১৯ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কোনো কলেজ কর্তৃপক্ষ ৬০ মাসের অতিরিক্ত বেতন আদায় করতে পারবেনা। কিন্ত এই মহামরিতে সৃষ্ট সেশন জটে অতিরিক্ত সময়ের বেতন দাবি করছে প্রতিষ্ঠানগুলো।তাই শিক্ষার্থীরা বধ্য হয়ে আজ মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে। তাদের দাবি- “৬০ মাসের অতিরিক্ত বেতন নয়” হোস্টেল ফি মওকুফ করা হোক।
সবাই যখন কোভিড-১৯ থেকে বাঁচতে বাসায়, ঠিক তখন শিক্ষার্থীরা কেন রাস্তায়? অমানবিক কলেজ কর্তৃপক্ষের অন্যায় দাবীর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা দিশেহারা হয়ে মানববন্ধন করেছেন। সব বকেয়া একসাথে পরিশোধ করার নোটিশের প্রতিবাদে প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তবে এখন পর্যন্ত তারা কোথাও থেকে এর সমাধান পায়নি। তাহলে এর শেষ কোথায়? অভিযোগ করোনায় বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় না নিয়ে টাকার দিকে বেশী গুরুত্ব দিচ্ছে।তাহলে মালিকপক্ষ কি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান হিসেবেই মেডিকেল কলেজের অনুমোধন নিয়েছেন! যেখানে মার্চ থেকেই বন্ধ রয়েছে ক্লাস ও হোস্টেল। তবে চার মাস ধরে পুরো টিউশন ফি ও হোস্টেল ভাড়ার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, করোনার সময় ক্লাস ও হোস্টেল বন্ধ থাকলেও আমাদের কাছে তারা পূর্ন বেতন চাচ্ছে।অনলাইনে এক মাস ক্লাস নিয়েই সেমিস্টার শেষ করে দিতে চায় এসব বেসরকারি চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের মোবাইলে খুদেবার্তা পাঠিয়েছে সব বেসরকারি মেডিকেল কলেজ। একই সাথে শিক্ষার্থীদের নোটিশ দেয়া হয়েছে। এমন নোটিশে হতাশ শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষকদের বেতনসহ অন্যান্য খরচ বহন করার জন্যই চার মাসের বেতন পরিশোধ করতে হবে বলে জানান, বেসরকারি মেডিকেল কলেজের মালিকদের সংগঠনের সভাপতি মুবিন খান। তিনি বলেন, অনেক মেডিক্যাল কলেজই ছুটি দেয় নাই আর ফি না দেয়ার ফলে কলেজের শিক্ষকদের বেতন দেয়াটা অনেক কষ্টকর হয়ে পড়ে। এই বিষয় নিয়ে আমাদের আলোচনা চলছে।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের সংগঠন থেকে প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, কোনো দপ্তর থেকেই এখনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
আজ সকাল দশটায় বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল ও ডেন্টাল স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন এর উদ্যোগে প্রেস ক্লাবে উপস্থিত হয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীরা। সেখানে তারা তিন দফা দাবি জানান। তাদের উপর এই অত্যাচার আগে থেকেই চলছে বলেই অভিযোগ তুলেন শিক্ষার্থীরা। তারই ধারবাহিকতায় আমরা আজ উপস্থিত হয়েছি। মূলত তিনটি পয়েন্টের উপর আমাদের এই যৌক্তিক দাবি। বেতন নিয়ে অনেক দিন ধরে সহ্য করেছি। আমরা চাই এগুলো থেকে পরিত্রান পেতে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিবেদন, তিনি যাতে নিজে হস্তক্ষেপ করেন।
বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহঃ-
১. MBBS কোর্সে ৬০ মাস এবং BDS কোর্সে ৪৮ মাস(পুরাতন কারিকুলাম) /৬০ মাস(নতুন কারিকুলাম) এর বেশি বেতন নেয়া যাবে না।কোনো শিক্ষার্থী পেশাগত পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে বা কোনো কারণে পিছিয়ে গেলেও তার কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ নেয়া যাবে না।
২. প্রফেশনাল পরীক্ষাভিত্তিক বেতন প্রক্রিয়া চালুকরণ।
৩. বৈশ্বিক মহামারী করোনা চলাকালীন মাসগুলোতে বেতন পুনঃনির্ধারণ এবং হোস্টেল ফি পুরোপুরি মওকুফ করতে হবে।