অর্থনীতিতে শ্লথগতি ও অস্থিতিশীল বাজারের কারণে নতুন বাণিজ্য চুক্তির সংখ্যা হ্রাসের প্রভাব পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকগুলোর আয়ে। ফলে চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে মুনাফা হ্রাসের আশঙ্কা করছে ব্যাংকগুলো।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৪ অক্টোবর তৃতীয় প্রান্তিকের আয়-ব্যয়ের উপাত্ত প্রকাশ করবে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ চার ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান জেপি মরগ্যান চেজ, ওয়েলস ফার্গো, সিটিগ্রুপ ও মরগ্যান স্ট্যানলি।
সুদহার বাড়ালে সাধারণত ব্যাংকগুলোর আয় বাড়ে, কারণ তারা গ্রাহকদের ঋণে অতিরিক্ত সুদ নির্ধারণ করতে পারে। কিন্তু বৃহত্তর অর্থনীতির ওপরই নির্ভর করে গ্রাহক ও ব্যাংকগুলোর সার্বিক স্বাস্থ্য।
গত মার্চে সুদহার প্রায় শূন্যের কাছাকাছি থাকলেও বর্তমানে তা ৩ থেকে ৩ দশমিক ২৫ শতাংশে নিয়ে গিয়েছে ফেডারেল রিজার্ভ।
সুদহার বৃদ্ধিতে ব্যাংক মুনাফা বাড়ার কথা থাকলেও উচ্চমূল্যস্ফীতি, সরবরাহ চেইন জটিলতা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সামনের দিনগুলোতে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। উচ্চ সুদহারে যুক্তরাষ্ট্রের দুই বৃহৎ ব্যাংক জেপি মরগ্যান ও ব্যাংক অব আমেরিকার নিট সুদ আয় বাড়তে পারে। কিন্তু ব্যাংকঋণের সুদহার বৃদ্ধিতে বন্দকি ঋণ ও গাড়ি শিল্পে চাহিদায় পতন হতে পারে।
ডয়চে ব্যাংকের বিশ্লেষক ম্যাট ও’কনর জানান, উদ্বেগের বিষয় হলো সুদহার অনেক বাড়তে পারে এবং এতে অর্থনীতিতে শ্লথগতি দেখা দিতে বা মন্দায় ফেলতে পারে।
রেফিনিটিভের উপাত্তে দেখা গিয়েছে, তৃতীয় প্রান্তিকে জেপি মরগ্যানের নিট আয় ২৪ শতাংশ কমতে পারে। অন্যদিকে সিটিগ্রুপ ও ওয়েলস ফার্গোর নিট আয় ৩২ ও ১৭ শতাংশ হ্রাসের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিংয়ের শক্তিঘর হিসেবে পরিচিত গোল্ডম্যান স্যাকসের মুনাফা ৪৬ শতাংশ কমতে পারে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়। প্রতিদ্বন্দ্বী মরগ্যান স্ট্যানলির মুনাফা কমছে ২৮ শতাংশ। একীভবন, অধিগ্রহণ ও প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) থেকে করপোরেশনগুলোর সুদ আয় হ্রাসের ফলে তাদের আয়ে প্রভাব পড়েছে।
বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস, তৃতীয় প্রান্তিকে ব্যাংক অব আমেরিকার মুনাফা প্রায় ১৪ শতাংশ কমতে পারে। চলতি বছর এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ব্যাংক সূচক প্রায় ২৬ শতাংশ কমেছে।
গত মাসে জেপি মরগ্যানের প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল পিন্টু বিনিয়োগকারীদের বলেন, তৃতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকের ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং ফি ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ কমতে পারে।
বিষয় সম্পর্কে অবগত সূত্রের বরাতে রয়টার্স গত মাসে জানায়, ৮৫৫ কোটি ডলার ঋণ ও বন্ড বিক্রি থেকে ৭০ কোটি ডলারের লোকসান গুনেছে ওয়াল স্ট্রিটভিত্তিক ব্যাংকগুলো।
ফিচ র্যাটিংসের প্রাক্কলনে বলা হয়, চলতি বছর সার্বিক ব্যাংকঋণ ১০ শতাংশ থেকে ১১ শতাংশ বাড়তে পারে।
প্রতিষ্ঠানটির বিশ্লেষক ক্রিস্টোফার ওলফ বলেন, ওয়াল স্ট্রিটের জন্য ২০২২ সালের চেয়ে ২০২৩ আরো কঠিন হিসেবে হাজির হতে পারে।