শি জিন পিং সরকারের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার চীন থেকে দারিদ্র্যদূরীকরণ। সরকার এ লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি উচ্চাভিলাসী প্রকল্প হাতে নিয়েছে। জিন পিং নিজেও অনেক প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকা পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করেছেন এবং সেসব এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে তাদের উন্নয়ন ভাবনা নিয়ে সরাসরি মতবিনিময় করেছেন।
জিয়াংসু চীনের ধনী প্রদেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও আকারের দিকে থেকে অবশ্য গুয়াংদংয়ের চেয়ে এক ধাপ পিছিয়ে। এ প্রদেশের সর্বশেষ সরকারি উপাত্ত বলছে, গত চার বছরে ২৫ লাখ ৪০ হাজার মানুষের দারিদ্র্যমুক্তি ঘটেছে। ২০২০ সালে এ প্রদেশকে সম্পূর্ণ দারিদ্র্যমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ।
দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা ১৭ জনের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যও দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাদের ব্যাপারে বলা হয়েছে, এদের সবাই কর্মক্ষম। অবশ্য চার জন অসুস্থ।
ভূরাজনৈতিক ও অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতার মধ্যেও চীনের অর্থনীতি বছরে ৬ শতাংশ হারে বাড়ছে। পুরো দেশের সম্পদ দিন দিন বাড়লেও জিয়াংসুর এ প্রচারণা অনলাইনে প্রশ্নের মুখে পড়ছে। চীনা সোস্যাল মিডিয়া ওয়েইবুতে একজন মন্তব্যে লিখেছেন, তারা কীভাবে এতোটা নিখুঁত তথ্য-উপাত্ত দিতে পারছে?
চীনের দারিদ্র্য বিমোচন প্রচারণা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। কারণ সাম্প্রতিক দশকগুলোতে চীনের অর্থনীতি রকেট গতিতে এগোলেও দারিদ্র্য একেবারে নাই হয়ে যায়নি। তাছাড়া সম্পদ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বৈষম্যও বাড়ছে। চরম দারিদ্র্যে বসবাসরত মানুষের গল্প মাঝে মধ্যেই গণমাধ্যমে আসছে।
আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে পুরো চীনে দারিদ্র্যের নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা নেই একেক প্রদেশ একেকভাবে দারিদ্র্যকে সংজ্ঞায়িত করে। তবে জাতীয় মান হিসেবে বলা হয় বাৎসরিক নিট আয় ২ হাজার ৩০০ ইউয়ান বা ৩৩১ ডলার। এ হিসাবে ২০১৭ সালে চীনে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ছিল ৩ কোটি। তবে বেশ কয়েকটি প্রদেশ তাদের দারিদ্র্যসীমার ন্যূনতম মান বাড়িয়েছে। এর মধ্যে জিয়াংসু এখন বাৎসরিক নিট আয় ৬ হাজার ইউয়ানকে দারিদ্র্যসীমা হিসেবে ধরে। এর অর্থ দৈনিক আয় প্রায় ২ দশমিক ৪ ডলার। এটি বিশ্বব্যাংক নির্ধারিত আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমার (১ দশমিক ৯০ ডলার) বেশ উপরে। সূত্র: বিবিসি