বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এরইমধ্যে ১ কোটি ৭০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। জনস্বাস্থ্যের পাশাপাশি এ ভাইরাসের প্রভাব পড়ছে অর্থনীতির উপরও। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ বছর বিশ্ব অর্থনীতির মোট জিডিপি কমবে প্রায় ৪.৯ ভাগ। বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) ইউরোপের বড় অর্থনীতির দেশ জার্মানি জানিয়েছে এপ্রিল থেকে জুন এ তিন মাসে দেশটির অর্থনীতির আকার কমেছে ১০.১ শতাংশ। ১৯৭০ সালের পর দেশটির জিডিপি কখনও এতোখানি কমেনি। এবার যুক্তরাষ্ট্রও জানালো, তাদের অর্থনীতির উপর করোনার থাবা বসানোর আলামত দেখা দিতে শুরু করেছে। আগের বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসের তুলনায় এ বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসের প্রবৃদ্ধি রেকর্ড হারে কমেছে।
করোনার প্রকোপ ঠেকাতে মার্চ মাসজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির একটা বড় অংশে শাটডাউন চলছিলো। আর তারই প্রভাব পড়তে দেখা গেছে এপ্রিল, মে, জুন মাসে। ১৯৪৫ সাল থেকে রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর এটাই কোনও অর্থনৈতিক পর্বের সবথেকে বড় জিডিপি সংকোচন।
এর আগে ২০০৮ সালের মন্দার সময় এপ্রিল থেকে জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপির হার ৮.৪ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল। তার আগের রেকর্ডটি ছিল ১৯৫৮ সালের। তখন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ১০ শতাংশ কমে গিয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জ্যাসন রিড বলেন, ‘এটি এমন এক ঘটনা যা আমরা আগে কখনও দেখিনি। প্রথমে আমরা মনে হয়েছিলো এটি এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় যা একই সময়ে গোটা দেশকে আঘাত করেছে। কিন্তু এখন তারচেয়েও খারাপ কিছু হতে যাচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্রে এরই মধ্যে দুই কোটিরও বেশি মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। চাকরি হারানোর এই রেকর্ড ছিল ১৯৩০ সালের পর সর্বোচ্চ। বেকার মানুষদের সরকারি সুবিধা পাওয়ার জন্য অনেক আবেদন জমা পড়ছে। শুরুর দিকে চাকরি হারানো মানুষদেরকে সপ্তাহে ৬০০ ডলার সুবিধা ভাতা দিচ্ছিলো যুক্তরাষ্ট্র। তবে শুক্রবার এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে। বিকল্প কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান, নিউইয়র্ক টাইমস