শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মস লোকসান কাটিয়ে বড় মুনাফায় ফিরেছে। ২০২১ সালে কোম্পানিটি ১৪০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। তবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কিছুই দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে বেশ কয়েক বছর লোকসান দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের ঠকানোর অভিযোগও উঠেছে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে তালিকাভুক্ত গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মস পুনরায় ব্যবসা শুরু করার কথা জানিয়েছিল কয়েক মাস আগেই। গত ১০ আগস্ট কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি)। ২০২০ সালে ১৭ কোটি টাকা লোকসান হলেও ২০২১ সালের আর্থিক প্রতিবেদন কোম্পানিটির মুনাফা দেখানো হয়েছে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা।
গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচারের ২০২১ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, এক বছরে (২০২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬৭২ টাকা ৬৭ পয়সা। সবমিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির আয় হয় ১৩৯ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার ৪৩৭ টাকা।
২০২০ সালে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৮৪ টাকা ৭৭ পয়সা। ওই বছর কোম্পানিটি সর্বমোট ১৭ কোটি ৫৪ লাখ ৬৮ হাজার ৫২৭ টাকা লোকসান দিয়েছে। এছাড়াও বেশ কয়েক বছর ধরে কোম্পানিটি লোকসান দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের ঠকাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মস শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একটি কৃষিভিত্তিক কোম্পানি। ১০৯ একর জমির মালিকানা থাকা সত্ত্বেও কার্যকারী মূলধনের ঘাটতির কারণে গত দুই দশক ধরে খারাপ অবস্থায় রয়েছে কোম্পানিটি। ১৯৯৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছিল গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার। ২০০২ সাল থেকে কার্যকরী কার্যক্রম পরিচালনা এবং লভ্যাংশ প্রদান করতে ব্যর্থ হওয়ায় ওটিসি মার্কেটে স্থানান্তর করা হয়।
গত বছরের (২০২১) ১৬ সেপ্টেম্বর বিএসইসি ওটিসি মার্কেট বিলুপ্ত ঘোষণা করে। ফলে ওটিসি মার্কেটের আওতাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আর্থিক সক্ষমতা ও ভবিষ্যত সম্ভাবনার ভিত্তিতে এসএমই প্ল্যাটফর্ম ও অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে (এটিবি) স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালে ওটিসি মার্কেট থেকে গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচারকে এসএমই প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তর করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচারের ৫৬ দশমিক ০২ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে। উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে রয়েছে ২৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ শেয়ার। বাকি ১৮ দশমিক ১২ শতাংশ শেয়ার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
২০২১ সালে শেয়ারপ্রতি ৬৭২ টাকা ৬৭ পয়সা আয় করলেও কোম্পানিটিতে বিনিয়োগ থাকা সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ দেয়নি গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার। এমনকি সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরও ইপিএসের বিষয়ে কোন তথ্য জানানো হয়নি।
২০২১ সালে আয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান কিছু জানাননি। তবে নিয়মিত কোম্পানির পর্ষদ সভা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পর্ষদ সভা সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের জানানোর কিছুই নেই।