ইসলামের দৃষ্টিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন জুমার দিন। এই দিনে মহান আল্লাহ মানবজাতিকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। হাদিসের ভাষ্যমতে এই দিনই কিয়ামত সংঘটিত হবে। নবীজি (সা.) এই দিনকে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন বলেছেন।আবু লুবাবা বিন আবদুল মুনজির (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন হলো সপ্তাহের দিনগুলোর নেতা এবং তা আল্লাহর কাছে বেশি সম্মানিত। এ দিনটি আল্লাহর কাছে কোরবানির দিন ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়ে বেশি সম্মানিত। এ দিনে আছে পাঁচটি বৈশিষ্ট্য। এ দিন আল্লাহ আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেন, এ দিনই আল্লাহ তাঁকে পৃথিবীতে পাঠান এবং এ দিনই আল্লাহ তাঁর মৃত্যু দান করেন। এ দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে, কোনো বান্দা তখন আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করলে তিনি তাকে তা দান করেন, যদি না সে হারাম জিনিসের প্রার্থনা করে এবং এ দিনই কিয়ামত সংঘটিত হবে। নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতা, আসমান-জমিন, বায়ু, পাহাড়-পর্বত ও সমুদ্র সবই জুমার দিন শংকিত হয়। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৮৪)
হাদিসে জুমার দিনের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো, এ দিনে বিশেষ একটি মুহূর্ত আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায়, তা পায়। সময়টা ঠিক কখন, তা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মত পাওয়া যায়। তবে একটি হাদিসে সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) দাবি করেন, তিনি সেই মুহূর্তটি নির্দিষ্ট করে জানেন। এবং তাঁর মতের পক্ষে যুক্তিও দেন।
আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিষয়টি অবহিত করি। সেখানে কাব (রা.)-ও উপস্থিত ছিলেন। আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বলেন, আমি দোয়া কবুলের বিশেষ সময়টি সম্পর্কে জানি। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমাকে তা অবহিত করুন। তিনি বলেন, সেটি হলো জুমার দিনের সর্বশেষ সময়। আমি (আবু হুরায়রা) বললাম, জুমার দিনের সর্বশেষ সময় কেমন করে হবে? অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যেকোনো মুসলিম বান্দা সালাতরত অবস্থায় ওই সময়টি পাবে...। ’ কিন্তু আপনার বর্ণনাকৃত সময়ে তো সালাত আদায় করা যায় না। আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) কি বলেননি, যে ব্যক্তি সালাতের জন্য বসে অপেক্ষা করবে সে সালাত আদায় না করা পর্যন্ত সালাতরত বলে গণ্য হবে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি বললাম, হ্যাঁ। আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বলেন, তা এরূপই। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৬)
অতএব আমাদের উচিত, জুমার দিন আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত মসজিদে অবস্থান করার চেষ্টা করা, দোয়া-দরুদ ও জিকির ইত্যাদিতে মশগুল থাকা। জুমার দিন বেলা ডোবার সময় আল্লাহর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে ক্ষমা চাওয়া এবং নিজেদের প্রয়োজনগুলো পূরণের ব্যাপারে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া।