তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন মেয়ে, এক ছেলে ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, পরিচালক সমিতি, প্রযোজক সমিতি, বাচসাস, সিজাবসহ চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন।
সাত্তারের পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকালে নারায়ণগঞ্জের নিজ বাসায় ব্রেনস্ট্রোক করেন প্রবীণ এই অভিনেতা। এরপর জরুরিভিত্তিতে তাকে রাজধানীর গ্রিন লাইফ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তার লাশ দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক জায়েদ খান।
চিত্রনায়ক সাত্তার ২০১২ সালের শুরুতে প্রথমবার ব্রেনস্ট্রোক করেন। এরপর তার শরীরের বামপাশ প্যারালাইজড হয়ে যায়। তাই স্বাভাবিক জীবনে তার আর ফেরা সম্ভব হয়ে উঠেনি। তবে কিছুটা সুস্থ হয়ে তিন বছর পর ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর বৃষ্টিময় অগ্নি পরিচালিত হাসি বাবা' নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ফের ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। সর্বশেষ এফআই মানিকের চাচ্চু আমার চাচ্চু' ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।
সাত্তারের স্ত্রী কাকলী জানিয়েছেন, গত দুই বছর ধরে অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়েছিলেন এই অভিনেতা। বছর ছয়েক আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ৩০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন। সেই টাকা দিয়েই এ অভিনেতার চিকিৎসা ও সংসার চলত।
নারায়ণগঞ্জের ছেলে সাত্তার ১৯৬৮ সালে ছোটবেলাতেই ইবনে মিজান পরিচালিত আমির সওদাগর ও ভেলুয়া সুন্দরী' ছবিতে শিশু চরিত্রে অভিনয় করে সিনেমা জগতে পা রাখেন। ১৯৮৪ সালের নতুন মুখের সন্ধানের মাধ্যমে নায়ক হিসেবে কাজী হায়াৎ পরিচালিত পাগলী' ছবিতে অভিনয় করেন।
এরপর তিনি আজিজুর রহমানের রঙ্গিন রূপবান, অরুণ বরুণ কিরণ মালা, কাঞ্চন মালা, ইবনে মিজানের পাতাল বিজয়, চাষী নজরুল ইসলামের শুভদা, মিলন চৌধুরীর রঙ্গিন সাত ভাই চম্পাসহ দেড় শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেন।
নায়ক হিসেবে তিনি সর্বশেষ মিলন চৌধুরীর ভিখারীর ছেলে ছবিতে অভিনয় করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স মাস্টার্স সম্পন্ন করা চিত্রনায়ক সাত্তার একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাও। নারী ও শিশু নির্যাতনের ওপর তিনি একটি তথ্যচিত্রও নির্মাণ করেছিলেন।